চলতি অর্থবছরে প্রথম ৫ মাসে বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি ১৩৩ শতাংশ বাড়ল

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৫

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই থেকে নভেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি অভূতপূর্বভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দেশের জন্য নতুন ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর এবং সহায়তার প্রতিশ্রুতি সমন্বয়ে মোট ১২১ কোটি ৯০ লাখ মার্কিন ডলার পাওয়া গেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এর প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের একই সময়ে এই অর্থের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫২ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ, এই বছর প্রতিশ্রুতির এত বড় অংক বৃদ্ধি পেয়েছে।

সূত্র মতে, এই সময়ের মধ্যে পাশের দেশগুলোসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যাপক প্রতিশ্রুতি এসেছে। এর মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫৮ কোটি ডলার, বিশ্বব্যাংক প্রায় দুই কোটি ডলার, এবং অন্যান্য দাতা সংস্থাগুলো সাড়ে ৬২ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য, এই পাঁচ মাসে বড় দাতা দেশ হিসেবে কোনো ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি দেয়নি ভারত, চীন, রাশিয়া ও জাপান। তবে, তারা আগের ঋণগুলো থেকে অর্থ ছাড় করেছে। একই সময়ে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে কোনও ঋণ প্রতিশ্রুতি আসেনি।

এবারের সময়ের মধ্যে রাশিয়া সবচেয়ে বেশি ঋণ ছাড় করেছে, মোট ৫৫ কোটি ডলার। এর পর রয়েছে বিশ্বব্যাংক, যা ৪৩ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। এডিবি ছাড় করেছে সাড়ে ৩৩ কোটি ডলার। চীন এবং ভারত ছেড়েছে যথাক্রমে সাড়ে ১৯ কোটি এবং ৯ কোটি ডলার। জাপানও দেওয়েছে প্রায় ৮.৫ কোটি ডলার।

ইআরডি বলছে, বৈরী পরিস্থিতি, ছাত্র-জনতার আন্দোলন, সরকার পতনের খোঁজ, প্রশাসনিক অস্থিরতা ও উন্নয়ন সহযোগীদের আস্থার সংকটের জন্য গত অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি কম ছিল। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হওয়ায় প্রতিশ্রতির পরিমাণ ও বাস্তবায়ন বাড়ছে।

এছাড়া, জুলাই-নভেম্বরের মধ্যে দেশে ঋণ ছাড় ও তা পরিশোধের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। গত বছরের একই সময়ে তুলনায় ঋণ ছাড়ের পরিমাণ বেড়েছে, তবে বাংলাদেশও সমপরিমাণ অর্থ ঋণের জন্য পরিশোধ করেছে। এই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা বাংলাদেশকে মোট ১৯৪ কোটি ডলার ঋণ প্রদান করেছে, যার বিপরীতে বাংলাদেশও সমান অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করেছে।

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে মূলধন ও সুদ বাবদ বাংলাদেশ ঋণ পরিশোধ করেছে মোট ১৮৯ কোটি ডলার।