ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়ার অস্ত্র উৎপাদন অনেক বেশি বেড়েছে, পুতিনের ঘোষণা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫

ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্প ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ প্রস্তুতিতে এই সময়ে রাশিয়ার উৎপাদন গতিশীলভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগের তুলনায় সর্বোচ্চ ২২ গুণের বেশি। এই তথ্য সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ক্রেমলিনে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিত প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত বক্তৃতায় জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ভ্লাদিমির পুতিন।

পুতিন উল্লেখ করেন, সামরিক উৎপাদনের মধ্যে ট্যাংকের সংখ্যা বাড়িয়েছে ২ দশমিক ২ গুণ, সামরিক বিমানের উৎপাদন বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ গুণ এবং আঘাত হানার ক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্র ও গোলাবারুতের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে ২২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষ সামরিক অভিযানে (এসএমও) অংশ নেওয়া সেনাদের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সরঞ্জাম উৎপাদন নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরিস্থিতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক প্রস্তুতিতে নতুন কৌশল ও প্রযুক্তিও যোগ করা হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা রিয়া নোভোস্তির সূত্রে ভাষ্য করে পুতিন জানান, ২০২২ সাল থেকে সরকার এই খাতে ব্যাপক সহায়তা ও বিনিয়োগ চালিয়ে এসেছে, যার ফলে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ও সরঞ্জামের উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, সাঁজোয়া যুদ্ধযান ও সাঁজোয়া জনবাহী যান (বিএমপি ও এপিসি) উৎপাদন ৩ দশমিক ৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ১২ দশমিক ৫ গুণ এবং রকেট আর্টিলারি অস্ত্রের উৎপাদন ৯ দশমিক ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

পুতিন যোগ করেন, এই অগ্রগতি মূলত প্রতিরক্ষা শিল্পের একযোগে প্রচেষ্টার ফল। তিনি আরও বলেন, পুরো দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন না থাকলে এই ধরনের অগ্রগতি সম্ভব হতো না। তিনি ভবিষ্যৎ যুদ্ধের জন্য নতুন কাঠামো ও প্রযুক্তির উন্নয়নে জোর দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এর সক্রিয় ব্যবহার ও অস্ত্র পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণের উন্নয়ন।

পুতিন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে উল্লেখ করেন, উৎপাদন খরচ কমানোর পাশাপাশি এই খাতের উন্নতিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি এ জন্য অস্ত্র গবেষণা, পরীক্ষাগার ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো উন্নত করা ও আরও আধুনিক রোবোটিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, অস্ত্র নির্মাণে মোট ব্যয়ের অর্ধেক অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকই বরাদ্দ করা হচ্ছে উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোতে, যেখানে রয়েছে পারমাণবিক বাহিনী, মহাকাশ সম্পদ, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা।

অর্থমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে পুতিন বলেন, ২০২৭ থেকে ২০৩৬ সালের মধ্যে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ অস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতার দিক থেকে পরিকল্পনা গণ্য করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্দিষ্ট অস্ত্রের সংখ্যা নয়, বরং সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় আউটপুট ও সক্ষমতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হবে। এই মূল কর্মসূচি গত ১৭ ডিসেম্বর প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলাউসোভ উপস্থাপন করেন।