মওলানা ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী এনসিপি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর অভ্যন্তরে চলমান বিভক্তি ও অস্থিরতার মধ্যেই আরও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হলো। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নাতি এবং দলের কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী আজাদ খান ভাসানী দল থেকে অবসরে চলে গেছেন। তিনি গত রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক অভিনন্দন জানানো বার্তার মাধ্যমে দলের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।

আজাদ খান ভাসানী তাঁর ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, তিনি অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের টানে এনসিপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন মওলানা ভাসানীর দেখানো গণমানুষের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এবং আধিপত্যবাদবিরোধী রাজনীতির চর্চা করতে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি প্রত্যাশার সঙ্গে মিল না হয়ে দলটির মধ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা এবং ত্যাগের গভীরতার অভাব অনুভব করেছেন। তিনি মনে করেন, দলটি একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক মর্যাদা এবং মওলানা ভাসানীর আদর্শ রক্ষা করাই এখন তার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, দলটির সঙ্গে সকল ধরনের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক শেষ করবেন। তিনি দলটির আগামী পথচলার জন্য শুভকামনা জানিয়ে বলেন, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে দলের গতি-প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং শেষে আদর্শের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর আজাদ খান ভাসানীকে এনসিপির কৃষক উইংয়ের প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী পদে নিযুক্ত করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ১০ দলীয় জোটে এনসিপির অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের অভ্যন্তরে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল, তার মধ্যে আজাদ খান ভাসানীর পদত্যাগ একটি বড় ঝটকা হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের ঠিক আগে এই ধারাবাহিক পদত্যাগ দলটির অভ্যন্তরীণ আদর্শিক সংকটকে আরও প্রকট করে তুলেছে। মূলত জুলাইয়ে শুরু হওয়া স্পিরিটের ভিত্তিতে কাজ করা নেতাদের মধ্যে এখন এক ধরনের অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে, যারা নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছেন। এই চলমান পরিস্থিতিতে দলটির নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে এবং ভবিষ্যত পথচলার জন্য আলাদা আলাদা মতামত তৈরি হয়েছে।