তাজনূভা জাবীন অভিযোগ, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৫ জুলাই গণআবহাওয়ার প্রাণোচ্ছল আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে কৌশলে জামায়াতে ইসলামীর হাতে তুলে দিতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীন। আজ রোববার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ ও আবেগপ্রবণ পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানান। তার এই পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গ ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন। তাজনূভা জাবীন অভিযোগ করেন যে, এনসিপির জামায়াতের সঙ্গে এ জোট কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি অত্যন্ত সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত। তিনি বলেন, সম্প্রতি ১২৫ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হলেও শেষ মুহূর্তে মাত্র ৩০টি আসনের বিনিময়ে এই জোটের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এতে বাকিরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের আশা হারিয়ে ফেলেছে এবং স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়ানোর সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, যেখানে জামায়াতের কাছ থেকে চরমোনাই পীরের দল ৭০টি আসন পেয়েছে, সেখানে জুলাইয়ের আন্দোলনের আদর্শকেই কেন এই দল ছোট করে ফেলল, তা স্পষ্ট নয়। জাবীন মনে করছেন, জুলাইয়ের রাজনৈতিক আন্দোলনকে জামায়াতের স্বার্থে জিম্মি করে দিচ্ছেন কিছু নেতা। অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে তাজনূভা জাবীন কড়া সমালোচনা করে বলেন, এনসিপির শীর্ষ নেতারা এখন নিজেদের মধ্যে ‘মাইনাসের রাজনীতি’ নিয়ে ব্যস্ত, যার কারণে দেশের জন্য নতুন কোনও নীতিমালা বা ভাবনা সামনে আসছে না। তিনি অভিযোগ করেন, প্রকৃত পন্থী ও আদর্শবাদীদের দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে চাইছে নেতৃস্থানীয় কিছু নেতা, ফলে সংগঠনটি এখন আর সেই বিপ্লবী সংগঠনের চেহারা রাখে না। তার ভাষায়, এখন এনসিপি কেবল জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, এই বিশাল জনপ্রিয়তা ও ফলোয়ার থাকা ‘গণ-অভ্যুত্থানের নেতারা’ দলের শৃঙ্খলা ভাঙলেও তাঁদের কোনও জবাবদিহিতা নেই, অন্যদিকে সাধারণ সদস্যরা পদত্যাগ করলে তাদের অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। নিজের ব্যক্তিগত দুঃখের কথাও তিনি শেয়ার করেন। তিনি জানান, তাঁর মা, যিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তাঁর জন্য এসেছিলেন, আজকে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, রাজনৈতিক সততার জন্য তাঁর প্রতিশ্রুতি রয়েছে যে, তাঁর নির্বাচনী তহবিলে দেশের সাধারণ মানুষের দেওয়া প্রতিটি অর্থের হিসাব করে ফেরত দেবেন। তিনি মনে করছেন না, জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধে আন্দোলনে নামাই নেতিবাচক, বরং তিনি চেয়েছিলেন একটি স্বতন্ত্র ও স্বাধীন শক্তি হিসেবে এনসিপি নিজেদের অবস্থান বজায় রাখুক। দল ছাড়লেও, তিনি জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা ও দেশের গণতান্ত্রিক উন্নয়নের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। এই পদত্যাগের মাধ্যমে এনসিপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও আদর্শিক বিভাজন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল, যা ভবিষ্যতের রাজনীতি ও আন্দোলনের পথে বেশ গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করবে। SHARES জাতীয় বিষয়: