গৃহযুদ্ধ ও মানবিক সংকটের মধ্যেই মিয়ানমারে ভোট অনুষ্ঠিত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৫ ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ এবং মারাত্মক মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে যেন মানবতা হারাতে বসেছে মিয়ানমার। রোববার দেশটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সাধারণ নির্বাচন, যা এই কঠিন সময়ে এক আশার আলো বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটি অবিরাম সংঘাতে জর্জরিত, এই সংঘর্ষ দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাটনের পর থেকে সেনাশাসকরা এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর লড়াইয়ের কারণে মিয়ানমার আজ এক অগোছালো পরিবেশে পরিণত হয়েছে। এর বিপরীতে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন মার্চের শক্তিশালী ভূমিকম্প, জাতির ওপর আরওটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ২ কোটি মানুষ এখন জরুরি মানবিক সহায়তা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে। আকাশছোঁয়া মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে জীবন যাপন করছে। এই সংঘাতের কারণে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬ হাজার ৮০০ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে এবং ৩৬ লাখের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছে, আগামী বছর মিয়ানমারে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখে পড়বে, এর মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ বেঁচে থাকতে জরুরি সহায়তা দরকার। রটাআর্টের প্রতিবেদনে জানা গেছে, দেশের খাদ্য সংকট এবং ক্ষুধার তথ্য গোপন রাখতে জান্তা সরকার গবেষক ও ত্রাণকর্মীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘও জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় ত্রাণের মাত্র ১২ শতাংশ তহবিল সংগ্রহ হয়েছে, যা দেশকে বিশ্বের অন্যতম ‘অর্থসংকটপূর্ণ’ অঞ্চল করে তুলেছে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। ডব্লিউএফপি বলছে, এ বছর মিয়ানমারে ৫ লাখ ৪০ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগতে পারে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেশি। পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজনের শরীরিক বিকাশ পুষ্টির অভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এক সময় এই অঞ্চলের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে পরিচিত হলো মিয়ানমার, তবে এখন তা ধুঁকছে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী অর্থবছরে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশে ফিরে আসতে পারে। মূলত ভূমিকম্পের পর পুনর্বাসন কাজই এই প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি এখনো ২০ শতাংশের ওপরে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের তীব্র সংকটে ভুগছে দেশটি এবং এই পরিস্থিতিতে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রুশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বড় এক বিনিয়োগ চুক্তিতে পৌঁছেছে জান্তা সরকার, যা দেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে রুশ কোম্পানিগুলির জন্য নতুন দরজা খুলে দিতে পারে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: