নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িসহ আশেপাশের এলাকা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশের মাটিতে ফিরে আসার পর গুলশান-২ এর গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান। এই ঘটনাের ফলে বাড়িটির আশেপাশের সড়কসহ পুরো এলাকা কঠোর নিরাপত্তা বলয়কে ঘিরে ফেলা হয়েছে। বাড়ির চারপাশে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সিসিটিভি ক্যামেরা ও অস্থায়ী ছাউনির মাধ্যমে এই এলাকার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সিটি ঘুরে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা এর চিত্র লক্ষ্য করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাড়িটির সামনে থাকা সড়কে সাধারণ মানুষের চলাচল মঙ্গলবার রাত থেকেই নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে এবং একাধিক চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এই নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড (সিএসএফ) এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। পুরো এলাকা কর্ডন করে রাখা হয়েছে এবং নির্দিষ্ট পরিচয় ছাড়া কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।

তবে শুধু সরকারি নিরাপত্তাই নয়, বিএনপির নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেও আলাদা নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। শুধু বাসভবনই নয়, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়েও তারেক রহমানের জন্য আলাদা কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও, গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নম্বর বাড়িতে নতুন করে নির্মিত চারতলা রাজনৈতিক কার্যালয় দিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বিএনপি। এখান থেকেই ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

নতুন কার্যালয়ের দোতলায় রয়েছে আধুনিক ব্রিফিং কক্ষ, অন্যতলায় রয়েছে গবেষণা কেন্দ্র ও বিভাগভিত্তিক দপ্তর, যেখানে নির্বাচনী প্রস্ততি, নীতি প্রণয়ন এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কার বিষয়ক কাজ চলছে। একইসঙ্গে আশেপাশের গলিতে টাঙানো হয়েছে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন।

মাত্র কয়েক মাস আগে নির্বাসিত জীবন শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তিনি দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। দেশের মাটিতে পা রাখার পর, তিনি বিমানবন্দর থেকে তিনশ ফুট এলাকার সংবর্ধনা মঞ্চে বক্তব্য দেন। এরপর তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং তার মা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। পরে গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে পৌঁছান। এই বাড়িটি জিয়া পরিবারে একটি ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিচিত। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর, তৎকালীন সরকার বাড়িটি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়। অনেক বছর ধরে এখানে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে।

কয়েক মাস আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়িটির মালিকানাও খালেদা জিয়ার নামে হস্তান্তর করা হয়। পাশেই রয়েছে ‘ফিরোজা’, খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও, এই বাড়িটি প্রস্তুত করা হয়েছে তার ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের জন্য।

অন্যদিকে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। দলীয় নেতাদের মতে, এটি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে আসা নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।