নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়ি ও আশেপাশের এলাকা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৫

দীর্ঘ ১৭ বছর বিদেশে নির্বাসিত থাকার পর অবশেষে দেশের মাটি ছুঁয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) তিনি দেশে ফিরে রাজধানীর গুলশান-২ এর গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান, যেখানে তার অবস্থান ঘিরে পুরো এলাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার আগমনে বাড়িটির আশেপাশের সড়কও কড়া নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা পড়ে যায়। বাড়ির চারপাশে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়, সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো এবং অস্থায়ী ছাউনি দেয়া হয়েছে, যা এই এলাকার গুরুত্ব প্রকাশ করে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে, গুলশান নর্থ অ্যাভিনিউ এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল জোরদার করেন। একাধিক চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়। নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি, সিএসএফ (চেয়ারপারসন সিকিউরিটিসহ) এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। পুরো এলাকা ঘেরাও করে রাখা হয় এবং অপ্রয়োজনীয় কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে, সরকারি নিরাপত্তার পাশাপাশি বিএনপির নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। শুধুমাত্র তার বাসা নয়, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়েও তার জন্য পৃথক সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে, গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নম্বর বাড়িতে নতুন চারতলা রাজনৈতিক কার্যালয়ে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ সাংগঠনিক কাজের পরিকল্পনা চলছে। নতুন এই কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় আধুনিক ব্রিফিং কক্ষ রয়েছে। অন্য তলাগুলোতে গঠিত হয়েছে গবেষণা সেল ও বিভাগভিত্তিক দপ্তর, যেখানে নির্বাচনী এবং নীতিগত সমন্বয়, রাষ্ট্রীয় সংস্কার বিষয়ক প্রস্তুতি চলমান। আশপাশের গলিতে তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুনও টাঙানো হয়েছে। ১৭ বছর পর নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর, বৃহস্পতিবার তিনি দেশে ফিরে এসে বিমানবন্দর থেকে তিনশ ফুট এলাকায় সংবর্ধনা সভায় ভাষণ দেন। এরপর তিনি গুলশানের এভারকেয়ার হাসপাতালে তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। এরপরই তিনি গুলশানের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে যান, যা জিয়াউর রহমান পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শহীদ হওয়ার পর তৎকালীন সরকার এই বাড়িটিকে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ করে দেয়। বছরের পর বছর ধরে এই বাড়িতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছু মাস আগে, আনুষ্ঠানিকভাবে এই বাড়িটির মালিকানা দলিল খালেদা জিয়ার নামে হস্তান্তর করা হয়। পাশেই রয়েছে ‘ফিরোজা’, যা খালেদা জিয়ার দীর্ঘদিনের বাসভবন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও, পাশের বাড়িটিতে আবার একটি ঐতিহাসিক প্রেরনার জন্য প্রস্তুতি চলমান। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তনে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা গেছে। দলের নেতাদের মতে, এটি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতার দেশে ফেরার ঘটনা নয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ক্রান্তিলগ্নে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা।