কুড়িগ্রামে গ্রাম আদালতকে সফলতার সাথে পরিচালনা Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫ সাধারণ গ্রামীণ জনগণের ন্যায্য বিচার পেতে সুবিধা সৃষ্টি করতে ‘ভিলেজ কোর্ট’ বা ‘গ্রাম আদালত’ ব্যবস্থা গুরুত্বপুর্ণ ও কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এটি বিশেষ করে প্রান্তিক ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। গত এক বছরে কুড়িগ্রামের এই আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ নারী বিচারপ্রার্থী। এই তথ্য বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অংশীজন সমন্বয় সভায় জানানো হয়। সভায় কালীমন্দিরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ-তৃতীয় পর্যায়ের জেলা ব্যবস্থাপক দৌলতুন্নেছা উপস্থিত ছিলেন, যার সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বি এম কুদরত-এ-খুদা। এই সভায় জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দফতর এবং সাংবাদিকরা অংশ নেন। তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে মোট ৩ হাজার ৮৫ জন আবেদনকারী মামলা করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৭৫৮ এবং জেলা আদালত থেকে পাঠানো মামলা ৩২৭টি। বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে ৬৫৩ জন নারী, যা মোট বিচারপ্রার্থীর প্রায় ৪০ শতাংশ। এছাড়াও, এই সময়ে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় সম্ভব হয়েছে। তবে প্রচার ও সচেতনতার অভাব, ইউনিয়ন পরিষদের অসহযোগিতা এবং রাজনৈতিক নানা সমস্যার কারণে এই ব্যবস্থা যথাযথভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে না বলে অংশীজনরা মত প্রকাশ করেন। কিছু ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতি ও মামলার আসামিদের পলাতক থাকায় কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। এখনো অনেক গ্রামীণ মানুষ এই আদালত ও এর সুবিধাগুলোর সম্পর্কে অজ্ঞ, যা এই উদ্যোগের লক্ষ্য অর্জনে বাধা হিসেবে উপস্থিত। অনেকে মনে করেন, প্রচলিত আদালতের তুলনায় গ্রাম আদালত বিরোধ নিরসনে দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই কার্যক্রম আরও বেগবান করার জন্য আদালতের সদস্যদের সম্মানী বাড়ানো, অভিযোগের নিষ্পত্তিকে থানায় না পাঠিয়ে সর্বপ্রথম গ্রাম আদালতেই সমাধানের ব্যবস্থা করা, ইউনিয়ন পরিষদের তত্পরতা বাড়ানো, এবং এই সংক্রান্ত ব্যাপক প্রচারণা চালানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, যা স্থানীয় পর্যায়ে ছোটখাটো বিরোধ দ্রুত ও সহজভাবে সমাধান করতে সক্ষম। এই অর্ডিন্যান্সের আওতায় তিন লাখ টাকার below বিরোধ নিষ্পত্তি করা যায়, যেখানে কোনো আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে, এই পদ্ধতিকে আরও কার্যকর ও জনপ্রিয় করে তুলতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতায় নানা পরিকল্পনা করছে। ২০০৯ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যাতে বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিচার নিশ্চিত হয়। SHARES সারাদেশ বিষয়: