বিশ্ববাজারে ২০২৬ সালে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪,৯০০ ডলারে উঠতে পারে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫

বিশ্ববাজারে ২০২৬ সালের শেষের দিকে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪,৯০০ ডলারে পৌঁছানোর পূর্বাভাস দিয়েছেন গোল্ডম্যান স্যাকস। যখন থেকে সোনার মূল্য আউন্সপ্রতি চার হাজার ডল 넘িয়ে গেছে, তখন থেকেই বিভিন্ন সংস্থা ভবিষ্যদ্বানি করছে যে দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

গত দুই মাসে গোল্ডম্যান স্যাকসসহ বহু বৈশ্বিক সংস্থা সোনার দামের অগ্রজ মূল্যায়ন করেছেন এবং তাঁদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগামী বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ৪ হাজার ৯০০ ডলারের মধ্যে থাকবে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে সোনার মূল্য অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, গোল্ডপ্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে এটি আউন্সপ্রতি প্রায় ৪,৩০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

গোল্ডম্যান স্যাকসের গবেষণা মতে, বর্তমানে বিনিয়োগের পরিমাণ ততটা নয় যতটা হওয়া উচিত। এ কারণেই বিনিয়োগকারীরা বেশি করে সোনা কিনতে উৎসাহিত হচ্ছেন। যদি ভবিষ্যতে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ে, তাহলে হঠাৎ করে সোনার দাম খুব দ্রুত বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দাম আরও বৃদ্ধির জন্য বড় চাহিদার প্রয়োজন নেই; বরং স্টক মার্কেটের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে সোনা সংগ্রহ করে রাখলেই তার দাম আরও বেড়ে যাবে। তাই যত বেশি বিনিয়োগ হবে, তত বেশি করে সোনার মূল্য বৃদ্ধি পাবে।

এই বছর ইতোমধ্যে সোনার দাম ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস বলছেন, ২০২৬ সালে খুব বেশি বৃদ্ধি আশা করা না হলেও, এর কয়েকটি কারণ অব্যাহত থাকবে।

প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনার ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ পশ্চিমা দেশের হস্তক্ষেপে জব্দ হওয়ার পরে, বুঝতে পারা গেছে যে, বিশ্বে সোনায় বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলও সম্প্রতি এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৪৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সোনা ভাণ্ডার বৃদ্ধি করতে ইচ্ছুক।

দ্বিতীয়ত, ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমানোর ধারা চালিয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসে এই নীতি আরও কমানো হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালে আরও ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা সোনায় ঝুঁকছেন, কারণ অতীতে দেখা গেছে, নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনাই অন্যতম।

বৈশ্বিক রাজনীতি ও ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা এ বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ডলারভিত্তিক বন্ডের বদলে সোনায় ঝুঁকছেন। এছাড়া, ডলার থেকে নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সোনার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে।

সোনার অন্যতম বড় সুবিধা হলো, এর দাম সাধারণত কমে না। গোল্ড প্রাইস ডট অরগের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ বছরে সোনার দাম আয়তনে ৭১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে গত পাঁচ বছরে এর বৃদ্ধির হার ১৩৪ শতাংশ, এবং এক বছরে প্রায় ৬১.৬৪ শতাংশ। এভাবেই সোনা বিনিয়োগের জন্য একটি স্থায়ী ও নিরাপদ বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।