শহীদ টিটোর আত্মত্যাগে সাভার হানাদারমুক্ত, গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৫

আজ ১৪ ডিসেম্বর, সাভারবাসীর জন্য এক গভীর গৌরবের দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে, কিশোর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর টিটোর সাহসী আত্মত্যাগের মাধ্যমে ঢাকার সাভার ও আশুলিয়া অঞ্চল মুক্তি পায় পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থেকে। এই তরুণ বীরের বীরত্বের গল্প আজও নতুন করে সাহস জোগায় সবার মধ্যে।

১৯৭১ সালের বিজয়যাত্রার শেষ প্রহরে, যাদের বুকের ভিতর ছিল মানুষের মুক্তির জন্য অসীম সাহস, সেই তরুণ গেরিলারা পাক সেনাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়েছিল ভয়ংকর সংগ্রামে। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের চরম প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটতে শুরু করে। ঠিক তখনই, মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সাহসী কিশোর টিটো, বয়স মাত্র ১৬, সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যান শত্রুর মুখোমুখি। তিনি তখন আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার সামনের যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।

অকুতোভয় এই তরুণের পৈশাচিক ঘাতকের বুলেট বেঁধে দেয় তাঁর জীবন, কিন্তু তার আত্মত্যাগের মাধ্যমে সাভারে মুক্তির সূচনা হয়। তার এই বীরত্বপূর্ণ শহীদ হওয়ার ঘটনায় সাভারবাসীর হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবেন তিনি।

গোলাম দস্তগীর টিটো মানিকগঞ্জের উত্তর শেওতা গ্রামের সন্তান ও দশম শ্রেণির ছাত্র। তিনি ২ নম্বর সেক্টর অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তার মরদেহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরি গেট এলাকায় সমাহিত করা হয়। আজ তার স্মৃতি ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।

অতীতে, সাভারে ১৪ ডিসেম্বরের এই মহান সংগ্রাম ছাড়াও, মধুরআঁটি ও বিরুলিয়ার রুস্তমপুরে পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছিল। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডাররা। ১৫ ডিসেম্বর, যখন যৌথ বাহিনী পুরোপুরি ঢাকায় প্রবেশের জন্য অভিযান চালায়, সে সময় শত্রুরা পালিয়ে যায় সাভার থেকে, এবং শহরটি রক্ষিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য সাভারে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ, যেমন জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ‘সংশপ্তক’, ‘বিজয় যাত্রা’ ভাস্কর্য এবং বিভিন্ন সড়ক ও স্থাপনার নামকরণ শহীদদের স্মরণে। আজকের দিনে আমরা আরও গভীরভাবে স্মরণ করি সেই মহান শহীদদের সম্মান, যারা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন।