তারেক রহমানের মন্তব্য: বাংলাদেশ আজ ১৬ বছর ‘কালো মেঘের আড়ালে’ চাপা ছিল

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২৫

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের উপলক্ষে 자신의 ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানান, বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশ যেন এক বিশাল ‘কালো মেঘের আড়ালে’ চাপা পড়ে ছিল। তিনি বলেন, এই দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন মত ও অবদানের মানুষ, রাজনৈতিক কর্মী থেকে সাধারণ নাগরিক—সবারই বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন চালানো হয়েছে।

তারেক রহমানের ভাষায়, পতিত সরকার শাসনামলে রাতে দরজা কড়া নাড়ার মাধ্যমে মিথ্যা মামলা, গুম ও নির্যাতনের মতো পরিস্থিতিকে একটি নৈরাজ্যক্রমে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করে ছিল তাঁদের প্রিয়জনদের জন্য, যারা কখনো ফিরে আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, এই নিপীড়নের সবচেয়ে বড় বোঝা বহন করতে হয়েছে বিএনপিকেই। বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও হেফাজতে মৃত্যুর জন্য দলের নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের রক্তই সবচেয়ে বেশি ঝরবে।

তর্পদার আরও বলেন, শুধু রাজনৈতিক দল নয়, ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই ভয়ের সংস্কৃতির ছায়া পড়েছে। তাদের জীবনে মর্যাদা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি জানান, ২০১৫ সাল থেকে তাঁর কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তিনি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে গেছেন।

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ত্যাগের কথা। তিনি বলেন, এই অন্ধকার সময়ে দেশনেত্রী ছিলেন ধৈর্য ও প্রতিরোধের প্রতীক। মিথ্যা মামলা ও কারাবাসের মধ্য দিয়ে তাঁকে রাজনীতির থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হলেও, তিনি কখনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে সরে যাননি। নিজের পরিবারের উপর হওয়া নিপীড়নের বর্ণনা দিতে গিয়ে তারেক রহমান জানান, তার মা নিজ চোখে সন্তানকে জেলে নেওয়া ও নির্যাতনের যন্ত্রণা সহ্য করেছেন, এবং তাঁরা আরেক ভাইকে চিরতরে হারিয়েছেন।

ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি স্পষ্ট মত প্রকাশ করেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি বিশ্বাস করেন না, বরং সমাধানের পথে হাঁটতে চায়। তিনি বলেন, কষ্ট মানুষকে মহান করে তোলে—মায়ের এই শিক্ষা ধারণ করে তিনি এমন একটি রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন, যেখানে সরকারের সমর্থক আর বিরোধী—দুই পক্ষেরই ভয়ে ভীত থাকবার দরকার হবে না। তিনি আরও জানান, আজকের রাজনীতির চেয়েও বড় প্রয়োজন একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষিত থাকবে এবং ভিন্ন মতের জন্য কারও গুম বা খুনের শিকার হতে হবে না।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রসঙ্গে স্মরণ করেন আবরার ফাহাদ, ইলিয়াস আলী, সাগর-রুনি সহ অনেক শহীদের কথা। তিনি বলেন, বিএনপি বড় বিপদ সহ্য করেও পতিত হয়নি। সত্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে দলটি আরও শক্তিশালী হচ্ছে। ভবিষ্যতে যেন আর এমন নিপীড়ন ও বিচারবিচারহীনতার সংস্কৃতি ফিরে না আসে এবং মানবাধিকারই ভবিষ্যতের ভিত্তি হয়— এই লক্ষ্য নিয়েই বিএনপি তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।