বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, লন্ডন যাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৯, ২০২৫

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অপ্রত্যাশিত অবনতি হওয়ায় তার লন্ডন যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন, যকৃৎ বা লিভারের জটিলতা তুলনামূলকভাবে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে তারা গভীর উদ্বিগ্ন। ৮০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক অসুস্থতার সাথে লড়াই করে যাচ্ছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত বিদেশে যাওয়ার কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

তিনি গত ২৩ নভেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। শারীরিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে ২৭ নভেম্বর তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে বাত, বহুমূত্র, যকৃৎ, বৃক্ক, ফুসফুস, হৃদরোগ ও চোখের সমস্যা ভোগছেন তিনি। তাঁর চিকিৎসায় দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত টিম নিয়মিত বৈঠক করে প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসার ধরন পরিবর্তন করছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বয়সজনিত এই নেত্রীর শারীরিক উন্নতি ধীরগতিতে হচ্ছে। এক রোগের জটিলতা কমলেও অন্য একটি নতুন সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো কিডনি জটিলতা, যেখানে রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে জটিলতাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে, তবে ডায়ালাইসিস বন্ধ করলে অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তিনি এখনো পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নন, তবে তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

বেশ কিছু স্বল্পমূল্যে ও আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চিকিৎসা চলমান থাকলেও, শারীরিক পরিস্থিতি দেখে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নিবেন নির্দিষ্ট কোন সময়ে ভিসা বা বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে।

খালেদা জিয়ার জন্য এখনো প্রতিদিন খাবার পাঠানো হচ্ছে গুলশানের বাসা থেকে। তিনি হাসপাতালের শাশুড়ির শয্যাপাশে বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন, যেখানে তার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা করছেন। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, তার স্ত্রীসহ গৃহকর্মী ও ব্যক্তিগত সহায়করা সার্বক্ষণিক তাঁর পাশে রয়েছেন। ভাই শামীম এস্কান্দার ও তার স্ত্রী নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজ মঙ্গলবার অ্যাম্বুলেন্স আসার কোনও পরিকল্পনা নেই। বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত বিমান কর্মকর্তারা এটাই জানিয়েছেন। বিমানের এই নির্ধারিত সময়ে প্রবেশের সম্ভাবনা কমে গেছে এবং এটাই পঞ্চমবারের মতো তার বিদেশে যাত্রা পেছানো হলো। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, স্কিল শর্তে তার শারীরিক অবস্থা পরিস্থিতি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।