দুর্নীতির সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে দখল ও চাঁদাবাজি: টিআইবি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২৫

দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পাশাপাশি দুর্নীতির অবসান হয়নি, বরং এর সাথে যুক্ত হয়েছে দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজি। রাজনৈতিক ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারে বিভিন্ন মহল এই অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। আশ্চর্যজনকভাবে, বর্তমানে সরকারের ভিতরে কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির ঘটনা এখনও ঘটেই চলেছে, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়। রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা তুলে ধরেছেন।

বিশেষ করে তিনি উল্লেখ করেন যে, ‘সুশাসিত, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের অঙ্গীকার’ বাস্তবায়নের জন্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলির জন্য টিআইবির সুপারিশের প্রস্তাবনাগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এই সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু তা নিরুত্তাপ থেকে ব্যর্থ হয়েছে। তবে তিনি এও স্বীকার করেন যে, গত ১৫ বছরের জটিল পরিস্থিতি একসাথে কাটিয়ে ওঠা সহজ নয়; এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। গণতন্ত্র ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে রাজনৈতিক দলগুলো কতটুকু আন্তরিকতা দেখাবে এবং অর্থ ও পেশিশক্তির প্রভাব কতটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে, সেই নিয়েই ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

ব্যবসা খাতের সংস্কার বিষয়ে তিনি তুলে ধরেন, এই পরিবর্তন ঠাণ্ডা মাথায় ও ভেতর থেকে আসতে হবে। তিনি দেখান যে, গত দেড় দশকে ব্যবসায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব দেখা গেছে, যার ফলে কিছু নেতা-নেত্রী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, যদি ব্যবসার মধ্যে স্বচ্ছতা, উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সুবিধাভোগী ঠিকই লাভবান হবে, অন্যদিকে কিছু সুবিধাভোগীর পেছনে লুকানো স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

প্রতিবেশী দেশ ভারত নিয়ে ড. ইফতেখারুজ্জামান মন্তব্য করেন যে, সাম্প্রতিক কিছু ইস্যু ভারতের জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে বিব্রতকর কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাজয়ের প্রতিনিধিত্ব করে, যদিও তারা এখনো তার স্বীকারোক্তি করতে পারেনি। তিনি আশার আলো দেখান, যদি ভারত কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে বাস্তববাদী ও বৈরী রাজনীতির পরিবর্তে আরও বিশ্বস্ততা দেখানো শুরু করে, তবে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন সহজ হবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখতে পারলে ভবিষ্যত আরও সুদৃঢ় হবে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি আগামী নির্বাচনের জন্য ৫২টি প্রস্তাব তুলে ধরেন, যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে জুলাইয়ের জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রয়োগ এবং বিগত সময়ের হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার। তাছাড়া, আগামী সময়ের জন্য এই প্রস্তাবনাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির উপদেষ্টা অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের ও পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।