ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত ব্রিটেন Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫ ব্রিটেন বর্তমানে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা দেশটির ভবিষ্যতের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে, উচ্চশিক্ষা খাতে ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে, অন্যদিকে, ইউরোপের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় ব্যর্থতা দেশের নিরাপত্তা পথকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে। পাশাপাশি, নতুন এক বামপন্থি রাজনৈতিক দলের জন্মের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট নতুন করে বদলে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রিটেনের ঘটনাবলি দেশটিকে বিভিন্ন দিক থেকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। অর্থনৈতিক জটিলতা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সব ক্ষেত্রেই বিপদের আঁচ লেগেছে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আধিক্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস এবং ফি বৃদ্ধিজনিত কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অর্থনৈতিক দিক থেকে সমস্যা সমাধানে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অফিস ফর স্টুডেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, আগামী এক থেকে দুই বছরে এ সংস্থার ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হতে পারে, মোট ৫০টির মধ্যে শতকরা ৪৫ ভাগ প্রতিষ্ঠান এখনই বাজেট সংকটের সম্মুখীন। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই, কোর্স কেটেও অবস্থার অবনতি করছে, এবং একাধিক প্রতিষ্ঠান একীভূত হওয়ার পথে হাঁটছে। সরকারের পক্ষ থেকেও প্রতিকার হিসেবে টিউশন ফি সংক্রান্ত সংস্কার ও সীমা নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ব্যর্থতা ব্রিটেনের জন্য বড় ধাক্কা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনায় প্রবেশ ফি নিয়ে বিরোধের কারণে ১৫০ বিলিয়ন ইউরো/-র প্রতিরক্ষা তহবিল যোগদান বাধাগ্রস্ত হয়। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা এই ফলাফলকে হতাশাজনক বলে মনে করেছেন, এবং বলেছেন, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা শিল্পটি এখনও তৃতীয় দেশগুলোর সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। এই প্রবল অচলাবস্থার ফলে ব্রাসেলসের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন এক মানসিকতায় বন্দি হতে পারে। এছাড়া, ব্রিটেনে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়ছে, যেখানে প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে নতুন একটি দল ‘ইওর পার্টি’ গঠিত হয়েছে। এই দলটি লেবার পার্টির মূল বামপন্থিদের বিকল্প হিসেবে জন্ম নিয়েছে, তবে অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং কিছু নেতিবাচক ধারণার কারণে দলটি বেশ বিতর্কের মুখে। বলা হচ্ছে, এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার, যা ১৯৪০ সাল থেকে ব্রিটেনের বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। ডানপন্থি মিডিয়া এটিকে ‘অপ্রাসঙ্গিকতার আন্দোলন’ হিসেবে উপহাস করেছে। সামগ্রিকভাবে, এই তিনটি ঘটনার প্রভাব ব্রিটেনের শিক্ষা, অর্থনীতি, নিরাপত্তা এবং রাজনীতির বিভিন্ন স্তরে গভীর পরিবর্তন আনতে পারে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই সংকটগুলো নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করে তুলছে, যেখানে সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং অঙ্গীকারই تعیین করবে দেশের সমাজ ও অর্থনীতির পুনরুদ্ধার কতটা সফল হবে। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: