বাংলাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩, ২০২৫

বাংলাদেশ এখন পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে এগিয়ে যাচ্ছে, যা দেশের কৃষকদের জন্য বড় এক স্বস্তির খবর। তবে এর সাথে জড়িয়ে রয়েছে এক ধরণের বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ, যেখানে সরকারের সম্প্রতি সিদ্ধান্তে বিপাকের মুখে পড়েছেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। পেঁয়াজের এই উদীয়মান স্বয়ংসম্পূর্ণতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই দেশের কৃষকদের মাঠে-ঘাটে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে এমন সংকট সৃষ্টি হয় যেখানে পণ্যটি ক্রমশ পচে নদীতে পড়ে যায় বা মূল্যহ্রাসের মাধ্যমে ক্ষতি হয়। বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে অন্তত ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ সীমান্তের ওপারে পঁচে যাওয়ার মুখে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র দুই থেকে তিন রুপিতে, যা খুচরা বিক্রির জন্য খুবই কম। এ পরিস্থিতি ভবিষ্যতের জন্য একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশে যেহেতু উৎপাদন এত বেশি, তাই আমদানির প্রয়োজন এখন অনেক কম। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পরিস্থিতি একদিকে দেশের কৃষকদের জন্য গর্বের বিষয়, অন্যদিকে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। তারা জানান, অতীতে কিছু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলেও, কৃষকরা তাদের বাধা দিয়েছেন এবং বাজারের নিয়ন্ত্রণে আছেন। অতিরিক্ত পরিচালক ড. জামাল উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের কৃষকরা এখন স্বাবলম্বী হওয়ার পথে, তারা উৎপাদনে বেশি মনোযোগী। তার মতে, গত মৌসুমে বাংলাদেশে ৪৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, যা আমাদের চাহিদা থেকে অনেক বেশি। বর্তমানে বাজারে পুরাতন ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ রয়েছে, যে সব আগামী কয়েক মাসে আরও সরবরাহ হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার অতীতে অনেক আবেদন প্রত্যাখান করেছে এবং সীমান্তে পেঁয়াজের ব্যাপক সংরক্ষণ ও পচন রোধে জোর দিয়েছে। কৃষি উপদেষ্টারা বলছেন, দেশের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখন আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়ছে এবং সিন্ডিকেট এখন আর দেশের সাধারণ ভোক্তাকে জিম্মি করতে পারবে না। একদিকে পেঁয়াজের বাজারে এই স্বাবলম্বীতার ফলে আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেটের জাল ছিঁড়ছে, অন্যদিকে কৃষকের স্বপ্ন আরও ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। বাংলাদেশের এই মানসিকতা ও সক্ষমতা আমাদেরকে একটি শক্তিশালী কৃষি ভিত্তিক দেশ হিসাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে উৎপাদনে যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হবে বলে আশা করা যায়।