পার্বত্য চুক্তির বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিলের জন্য এবং অন্যান্য দাবিতে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) এর পক্ষ থেকে। সোমবার সকাল ১১টায় রাঙামাটির বনরূপায়ি এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজন করা হয় এই সংবাদ সম্মেলন, যেখানে সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পিসিএনপির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, চুক্তির ২৮ বছর পার হয়ে গেছে, কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলে প্রকৃত শান্তি ও স্থিতিশীলতা গড়ে উঠেনি। বরং, এই চুক্তির কিছু ধারা বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামো, সার্বভৌমত্ব এবং নাগরিক অধিকারকে ব্যাহত করছে। তিনি অভিযোগ করেন, এই চুক্তির ফলে পার্বত্য অঞ্চলে বিশেষ স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছে, আঞ্চলিক পরিষদের নেতারা নির্বাচিত নয়, অপ্রতিনিধিত্বশীলভাবে টিকে আছেন, ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈষম্য দেখা দিয়েছে, এবং ভোটার তালিকা তৈরিতে অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা হয়েছে—যা সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

অধিকন্তু, সংগঠনের দাবি, চুক্তির কিছু ধারায় জমি ক্রয়-বিক্রয়ে স্থানীয় পরিষদের একক সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি নতুন আইন নির্মাণে তাদের মতামত প্রয়োজনীয় করা হয়েছে। এরপর, ভোটার হতে ‘স্থায়ী বাসিন্দা সনদ’ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, যা দেশের নাগরিক অধিকার ব্যবস্থা সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়াও, অভিযোগ করা হয় যে এই চুক্তি মূলত নির্দিষ্ট এক জাতিগোষ্ঠীর স্বার্থে প্রণীত, যেখানে সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে সমতল ও পার্বত্য এলাকার বাঙালি জনগোষ্ঠীর দাবি-অধিকার উপেক্ষা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পিসিএনপি নিম্নোক্ত চারটি মূল দাবি উপস্থাপন করে:
১. পার্বত্য চুক্তি, যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা বাতিল করতে হবে।
২. পাহাড়ের সকল নাগরিকের জন্য সমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সেখানে থাকা নিরাপত্তা ক্যাম্পগুলো পুন:স্থাপন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শাব্বির আহমেদ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিনিয়র সহসভাপতি প্রফেসর আবু তাহের, রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. সোলায়মান, সহসভাপতি মাওলানা আবু বক্কর, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মো. লোকমান হোসাইন, স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য হাবীব আজম, যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুর হোসেনসহ আরও অনেকে।