মোংলা বন্দরের ৭৫তম বর্ষপূর্তি ও প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপন Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২৫ মোংলা বন্দরে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্লাটিনাম জয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন এবং বন্দরের কর্মকর্তারা একযোগে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। সোমবারের এই আয়োজনে যোগ দেন সেবক ও অতিথিরা, এ সময় বিস্তৃত শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা এবং বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাত ১২টা ১ মিনিটে, গত রোববার, রীতিমতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে বন্দরে অবস্থানরত সব দেশি-বিদেশি জাহাজে এক মিনিটের জন্য বিরতিহীন হুইসেল বাজানো হয়, যা বন্দর ও দেশের জন্য শুভ উদ্বোধন চিহ্নিত করে। সোমবার দুপুরে বন্দরের সদর দপ্তর থেকে.beginning তারাপুরের জেটি পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র্যালি আয়োজন করা হয়, যেখানে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর বন্দরের জেটির অভ্যন্তরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে কৃতি কর্মকর্তাদের সম্মাননা জানানো হয় এবং বন্দর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত করা হয়। উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে চালনা পোর্ট নামে এ বন্দরের প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৮৭ সালে এর স্বত্ব ও কার্যক্রমের আধুনিকায়ন ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোংলা বন্দর আরও বেশি কার্যক্ষমতা দেখিয়েছে। কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৮৮ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন, যা সফলভাবে ১ কোটিসহ ৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ, এই বছর তা পৌঁছেছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, যা অর্জিত হয়েছে ৩৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার বেশি। মুনাফাও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ২০ কোটি ৪৬ লাখ টাকার লক্ষ্যকে ছাড়িয়ে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা লাভ করা হয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে বন্দরের সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রতি ঘণ্টায় ২৪টির বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হচ্ছে, যা দ্রুত ও কার্যকর কাজের নিশ্চয়তা দেয়। একইসাথে নাব্যতা সুরক্ষায় নিয়মিত ড্রেজিং করা হচ্ছে, ফলে একাধিক জাহাজ একযোগে চলাচল করতে পারছে। বর্তমানে, প্রথম পাঁচ মাসে জাহাজ এসেছে ৩৫৬টি, কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১৩,৮৫৪ টিইইউজ, গাড়ি আমদানি হয়েছে ৪,১৩৯টি, এবং পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৪৪ লাখ টন। এছাড়াও, মোংলা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে ট্রানজিট পণ্য আমদানি-রপ্তানির জন্য এই বন্দরের গুরুত্ব ব্যাপক। স্থল, নৌ এবং রেলপথের মাধ্যমে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের পরিবহন সহজতর ও দ্রুততর হয়েছে। প্রত্যাশিত, পোর্ট রিসিপশন ফ্যাসিলিটি (পিআরএফ) চালু হলে তেলবাহী জাহাজে দুর্ঘটনা ও তেল নিঃসরণের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে, যা পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জেলার কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্যশস্য, কনস্ট্রাকশন উপকরণ, গ্যাস, চাল, গম, কয়লা, তেল, ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনে এই বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বর্তমানে চলমান ও ভবিষ্যত প্রকল্পের মাধ্যমে মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের বন্দরে রূপ দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। SHARES অর্থনীতি বিষয়: