ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করতে প্রক্রিয়া শুরু

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৭, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম ব্রাদারহুডের নির্দিষ্ট শাখাগুলোর বিরুদ্ধে বিদেশি ও বৈশ্বিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আরব বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ইসলামিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউসের এক ফ্যাক্ট শিটের ভিত্তিতে রয়টার্স জানিয়ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সোমবার এক নির্দেশিকা স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও ও অর্থমন্ত্রী স্কট বেস্যান্টকে মিসর, লেবানন ও জর্ডানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলোর ওপর তদন্ত ও প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই প্রতিবেদনটি ৪৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের বরাত দিয়ে জানানো হয়, এই দেশের যেখানে মুসলিম ব্রাদারহুডের শাখাগুলো উপস্থিত, সেখানে তারা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও হামলার সমর্থন বা উৎসাহ দিয়ে থাকে অথবা ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সহযোগিতা করে। হোয়াইট হাউসের ওই ফ্যাক্ট শিটে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুসলিম ব্রাদারহুডের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, কারণ এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও স্বার্থের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও অস্থিতিশীলতা ছড়াচ্ছে।’ রিপাবলিকান দলের বেশ কিছু নেতা ও ডানপন্থি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিতে চাইছেন। ট্রাম্পের প্রথম সময়েও তিনি এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেন। দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে রুবিও জানিয়েছিলেন, মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করার জন্য কাজ চলছে। প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণা বাস্তবায়নে তৎপরতা চললেও কেউ কেউ মনে করছেন, এটি মূলত আঞ্চলিক রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গত সপ্তাহে টেক্সাসের গভর্নর রিপাবলিকান গ্রেগ অ্যাবোট ইতোমধ্যে অঙ্গরাজ্য স্তরে মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় আনেন। ইসলামিক আন্দোলন হিসেবে ১৯২০-এর দশকে মিসরে প্রতিষ্ঠিত হয় মুসলিম ব্রাদারহুড। এটি দ্রুত মুসলিম বিশ্বে বিস্তার লাভ করে একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়, যদিও সংগঠনটি বেশিরভাগ কাজ গোপনীয়তার ভিত্তিতে চালায়। জর্ডানে এই সংগঠনের জনপ্রিয়তা রয়েছে, তবে ২০২০ সালে দেশটির শীর্ষ আদালত মুসলিম ব্রাদারহুডকে ভেঙে দেওয়ার রায় দেয়। এর আগে দেশটির সরকার অনেক সময়ই তাদের কার্যক্রমে চোখ বন্ধ করেছে। মিসরেও ২০১৩ সালে সংগঠনটি নিষিদ্ধ হয়। সেই বছর সংগঠনের নেতা ও নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনা নেতৃত্ব। এরপর থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নিয়মিত থাকছেন সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। অন্যদিকে, জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি ডেনি ড্যানন ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি শুধু ইসরায়েলের জন্য নয়, বরং আরও অনেক আরব দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা কমানোর সম্ভবনা দেখা হচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।