সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব বাহিনী প্রস্তুত: সিইসি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২৫

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচন নির্বিঘ্ন ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে সব প্রভাবশালী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজ (বুধবার) পিলখানায় বিজিবির ৫ ব্যাটালিয়নের আয়োজিত নির্বাচন কেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এই মন্তব্য করেন।

সিইসি বলেন, আজ এখানে আমি খুব সুন্দর একটি মহড়ার দৃশ্য দেখেছি। এটি আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতি বিবেচনা করে প্রস্তুত করা হয়েছে। সাধারণত নির্বাচনে বিভিন্ন ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন শক্তিশালী হতে হবে, তা লক্ষ্য করে বিজিবি প্রশিক্ষণ নিয়েছে। আমি এই প্রশিক্ষণ দেখে খুবই সন্তুষ্ট।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ডিউটি সাধারণত খুব বেশি সময়ের জন্য আসে না, এটি ৪ থেকে ৫ বছর পরপরই হয়। এ জন্য বাহিনীগুলোর আলাদাভাবে বিশেষ ট্রেনিং নিতে হয়। বিজিবির মূল কাজ সীমান্তে, কিন্তু নির্বাচনকালীন সময়ে তারা নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন হবে। পুলিশ ১৩০টি কেন্দ্রে নির্বাচন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, অন্যদিকে আনসার ও বিডিবির সদস্যরাও প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এ ধরনের মহড়া ও প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সদস্যরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবে।

সিইসি জানান, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সদস্যদের দায়িত্বশীলতার সাথে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই প্রস্তুতি নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে বড় প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, আমরা সবাই—আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিকেরা ও ভোটাররা—একত্রে কাজ করলে আমরা একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে পারব।

দেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সিইসি বলেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে ‘পারফেক্ট’ না হলেও, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, এখন সবাই নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন এবং রাস্তায় চলাচল করতে পারেন। ভোটের দফতর closer আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। ৩০ তারিখে আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক হবে এবং সেই সময় চূড়ান্ত ডিপ্লয়মেন্ট স্ট্র্যাটেজিও নির্ধারিত হবে। তিনি উল্লেখ করেন, পুলিশ চাইলে একজন বা দুজন সদস্য অতিরিক্ত মোতায়েন করতে পারে, কিন্তু সেনাবাহিনী কন্টিনজেন্ট আকারে কাজ করে। তাই তাদের মোতায়েনের সিদ্ধান্ত যথাযথ বিবেচনা করে নেওয়া হবে।

একটি পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে, যারা নির্বাচন প্রতিহত করার কথা বলেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ভোটার, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের সকলে মিলে এমন পরিস্থিতি প্রতিহত করতে হবে।

সিইসি আরও বলেন, সরকারের উপদেষ্টাদের ভোটে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া এ দেশের ধারা, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইনানুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

বাজে পরিস্থিতির ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য আমরা ধাপভিত্তিক প্রস্তুতি নিয়েছি। রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিজিবি জানিয়েছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে বিজিবির মোট ১২১০ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন থাকবে। সন্দীপ, হাতিয়া ও কুতুবদিয়াসহ অনেক অঞ্চলে তারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন না। আর সীমান্তবর্তী ১১৫টি উপজেলার মধ্যে ৬০টি উপজেলায় বিজিবির সদস্যরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনী নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

মক এক্সারসাইজ অনুষ্ঠানে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।