ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২৫ সোমবার, বাংলাদেশে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগে ঢাকায় আসার পর এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিলিত হন। বৈঠকটি আয়োজন করা হয় এক ঢাকার একটি হোটেলে, যেখানে দুপক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তোবগে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি দুই দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের মাধ্যমে একমাত্র বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে, যা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভুটানের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে কুড়িগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ভুটানের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতিমধ্যে কিছু কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শেরিং তোবগে আরও জানান, ভুটান সরকার বায়োডাইভারসিটি নগর গেলেফু নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, দেশের প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষা করে নতুন শহর গড়ে তোলা, যেখানে পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। গেলেফু নগর নির্মাণে প্রয়োজন হবে প্রচুর নির্মাণ উপকরণ, যা বাংলাদেশ থেকে আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। এর পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, সিরামিক পণ্য, তৈরি পোশাক ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী আমদানির জন্য ভুটানের আগ্রহের কথাও জানান। শেরিং তোবগে বাংলাদেশের পর্যটকদের ভুটানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তিনি উল্লেখ করেন, অন্যান্য দেশের জন্য যেখানে ভুটানে একটি রাতের জন্য সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ফি (এসডিএফ) ধার্য্য করা হয়েছে ১০০ ডলার, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটকদের জন্য এটি মাত্র ১৫ ডলার। এ সময় তিনি বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্য ভুটান ভ্রমণের ব্যাপারে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দেশটির স্বাধীনতার পর প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ভুটানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য আরও কাজ করতে হবে। তিনি জানান, আসন্ন বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের বৈঠকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও বেশি বাণিজ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে উৎসাহ দেওয়া হবে। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের মানসম্পন্ন ও আধুনিক ওষুধ, সিরামিক পণ্য, তৈরি পোশাক ও নির্মাণ উপকরণ উৎপাদন করছে। এসব পণ্য ভুটানে আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য তিনি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আহ্বান জানান। বৈঠকে ভুটানের ফরেন অ্যাফেয়ার্স ও এক্সটার্নাল ট্রেড মিনিস্টার ডি এন ধুনগায়েল, ইন্ডাস্ট্রি, কমার্স অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট মিনিস্টার লায়েন পো নামগায়েল দর্জি এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, শেরিং তোবগে দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান। সকাল ৮:১৫ মিনিটে তার বহনকারী ভুটানের ড্রুক এয়ারের ফ্লাইট হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। SHARES অর্থনীতি বিষয়: