বাহিনী গঠনে পাল্টা অবস্থানে হামাস ও ফিলিস্তিন Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০২৫ গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাব নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে রয়েছে হামাস এবং ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। পশ্চিমাদের এই প্রস্তাবটি ফিলিস্তিনের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকারক বলে ফিলিস্তিনের প্রধান ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ প্রত্যাখ্যান করলেও, গাজায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এর পক্ষে যুক্তি দেখছে ফিলিস্তিন সরকার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, গাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা নিয়ে ওয়াশিংটন কঠোরভাবে কাজ করছে। তবে, এই উদ্যোগের মধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে ট্রাম্পের নেতৃত্বে বিভিন্ন উদ্যোগ চললেও, এর ঠিক মাঝখানে লেবাননে হামলা চালিয়ে ইসরাইল কমপক্ষে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনের ফলে গাজাবাসীর জীবন এখনো অসহনীয়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কখনও হঠাৎ করে ইসরাইলি আক্রমণ, আবার কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে গাজা উপত্যকা কেঁপে উঠছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলের লাখো মানুষ দারিদ্র্য, ক্ষোভ, এবং অসহায়ত্বের মাঝে দিন কাটাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ এবং বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি আন্দোলনের মধ্যে, নভেম্বরের অগ্রগামী এক মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য চুক্তি হয়। তবে, গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন ও ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়েছে হামাস। গত সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে এ বিষয়ে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাবটি পাস হয়, তবে হামাস তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। মঙ্গলবার হামাস জানিয়েছে, বর্তমান কাঠামোতে বহু জাতিগোষ্ঠীর গঠন হলে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। তারা ইসরাইলের মদতপুষ্ট দেশগুলোর সমন্বয়ে গাজায় শান্তি বাহিনী গঠনের ব্যাপারে প্রস্তুত থাকলেও, এর বিরুদ্ধে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, এই প্রস্তাবের ইসরাইলি দাবিগুলো ফিলিস্তিনি জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী। হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাশেম বলেন, ‘প্রস্তাবে ইসরাইলের দাবিগুলো প্রাধান্য পেয়েছে, যা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের বিপরীতে। নেতানিয়াহু চান না যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তিনি গাজায় নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে চাচ্ছেন।’ তবে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এই প্রস্তাবের পক্ষে। তারা বলেছে গাজায় দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ। ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহীন বলেন, ‘জাতিসংঘের এই প্রস্তাব দীর্ঘমেয়াদে শান্তি স্থাপনের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ, প্রতি লাখো ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে এটি অত্যন্ত জরুরি।’ অন্যদিকে, হোয়াইট হাউজে সৌদি যুবরাজের আসন্ন বিমুক্কিন ডিনার অনুষ্ঠানে গাজা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ট্রাম্প বলেন, ‘শান্তি পরিষদের আকার এখনকার চেয়ে অনেক বড় হবে, কারণ এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতিগণ উপস্থিত থাকবেন। এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা আগে কখনো দেখা যায়নি। এর সভাপতি হয়ে আমি গর্ববোধ করছি।’ এদিকে, ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য ট্রাম্প বেশ কিছুদফা চাপ দেয়ার পরও, সৌদি আরবের যুবরাজ সালমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ছাড়া এই বিষয়ে এগোনো সম্ভব নয়। তবে, ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির স্বপ্ন দেখালেও, ইসরাইল লেবাননে একটি শরণার্থী শিবিরের ওপর হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১৩ জনকে হত্যা করেছে। ইসরাইল দাবি করছে, এটি সন্ত্রাসীদের দমনসহ সন্ত্রাসবিরোধী একটি পরিকল্পিত অভিযান। লেবানন সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এই হামলা অবৈধ ও ভিত্তিহীন। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: