চট্টগ্রামে বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা, ধারণক্ষমতা ৮ লাখে উন্নীত Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২৫ চট্টগ্রামের লালদিয়ায় নির্মিত হতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম আধুনিক ও বিশ্বমানের কনটেইনার টার্মিনাল, যার ধারণক্ষমতা হবে ৮ লাখ কনটেইনার। এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি বলেন, এই প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস বি.ভি. কোম্পানি নির্মাণ করবে। নির্মাণের পর দুই পক্ষের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদি কনসেশন চুক্তি সম্পন্ন হবে। এর মাধ্যমে অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগ হবে ইউরোপীয় বিনিয়োগ, যা বাংলাদেশের বন্দর খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য প্রদান করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী, লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল দেশের প্রথম সবুজ ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে গড়ে উঠবে। এটি বর্তমানে যেহেতু সক্ষমতার দ্বিগুণ বেশি জাহাজ ধারণ করতে পারবে এবং ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে রিয়েলটাইম নেভিগেশন সুবিধাসহ। এতে বাংলাদেশের সরাসরি বৈশ্বিক শিপিং সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে, ফলে রপ্তানি ও আমদানি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। প্রকল্পের আওতায় এপিএম টার্মিনালস বিভি লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালটির ডিজাইন, অর্থায়ন, নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। তবে, এর মালিকানা থাকবে চট্টগ্রাম বন্দরের অধীনে, যা সরকারের মূলধনী ব্যয় কমাতে সহায়ক হবে। আশিক চৌধুরী বলেন, এপিএম টার্মিনালস বিশ্বব্যাপী ৩৩টি দেশ ও ৬০টির বেশি টার্মিনাল পরিচালনা করছে এবং শীর্ষ ২০টি বন্দরের মধ্যে ১০টির অপারেটর। এশিয়া ও ইউরোপের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের বন্দর শাখে আসছে উন্নত প্রযুক্তি, দক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল দেশের প্রথম সবুজ ও স্মার্ট বন্দর হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এটি ৮ লাখেরও বেশি কনটেইনার হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হবে, যা দেশের বর্তমান সক্ষমতার দ্বিগুণ। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি চালু হওয়ার প্রত্যাশা রয়েছে। প্রকল্পের মোট বিনিয়োগ হবে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন dollar এর বেশি, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ইউরোপীয়স্থ একত্রীকরণ বিনিয়োগ। এলসিটি চালু হলে বন্দরের বার্ষিক কনটেইনার হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৪৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এই প্রকল্পের ফলে জনবল সরাসরি ৫০০ থেকে ৭০০ জনের মধ্যে কর্মসংস্থান পাবে, পাশাপাশি ট্রাকিং, লজিস্টিকস ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য হুমকিসূচক হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এপিএম টার্মিনালস স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করবে এবং আধুনিক ডিজিটাল টার্মিনাল ব্যবস্থাপনা, লিন পদ্ধতি ও ফ্লো প্রসেস ফ্রেমওয়ার্ক ব্যবহার করবে। এতে স্থানীয় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের দক্ষতা উন্নয়ন হবে। দ্রুত জাহাজ অঙ্কন ও কনটেইনারের ডোয়েল টাইম কমানোর মাধ্যমে রপ্তানিকারকরা সময়মতো পণ্য সরবরাহ করতে সক্ষম হবেন। পরবর্তী সময়ে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে, ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো, কোল্ড চেইন ও শিল্পাঞ্চলের বিকাশ হবে। জ্বালানি-সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ও জলবায়ু উপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পাবে, যা জাতীয় নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) অর্জনে সহায়ক হবে। চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বলেন, ‘লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল দেশের মাছের বন্দর খাতকে আধুনিক পর্যায়ে নিয়ে যাবে। এটি শুধু অবকাঠামো বিনিয়োগ নয়, এটি বাংলাদেশের লজিস্টিক সেক্টরকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে, রপ্তানি, কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।’ SHARES অর্থনীতি বিষয়: