আবার সন্ত্রাস ও নাশকতার আশঙ্কা: উদ্বেগের সৃষ্টি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৫

জুন ও জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে সন্ত্রাস ও নাশকতার আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা জনমনে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে কাজকর্ম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আবারো কঠোর আঞ্চলিক ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে। এই সময়ে রাজধানীতে শুধু গত দুদিনে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ, ১০টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, যা নিরাপত্তা বাহিনীকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কিছু নিষিদ্ধ করা দল ও তাদের জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে, কিন্তু আতঙ্কের গ্রাস পুরো শহরজুড়ে ছড়াতে শুরু করেছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কঠোর অবস্থানে রয়েছে, তবে পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে, আগামী কাল বৃহস্পতিবার দেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিষ্পত্তি হবে। এই রায়ের দিনকে কেন্দ্র করে কয়েকটি দল আবারও ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে লকডাউনের হুমকি দিয়েছে। ধানমন্ডির ১১/এ সড়কে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে একটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী মূল অভিযুক্ত বলে পুলিশ ধারণা করেছে। একই সময়ে, পুলিসের হাতে এসেছে তন্ময় সাহা ও ভোলা ফরহাদ নামে যুবলীগের দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করার খবর।

আরো একটি ঘটনা হলো, রাজধানীর সূত্রাপুরে ফায়ার সার্ভিসের গেটের সামনে পার্কিং করা একটি বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা রাতে ঘটেছে এবং ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে তদন্ত এখনও চলছে, কে বা কারা এই অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে সেটি স্পষ্ট নয়। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের মোকাবিলায় পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সাইবার সতর্কতা, সন্দেহভাজন ব্যক্তির নজরদারি এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ডিএমপি প্রধান শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, ১৩ নভেম্বরের আওয়ামী লীগের কর্মসূচির জন্য ঢাকায় কোন অস্থিতিশক্তি ঘটবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। তবে, দেশের বিভিন্ন মহলে মনে করা হচ্ছে, একদিকে দলটি তাদের নেতাকর্মীদের গোপনে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে ঝটিকা মিছিল করে আবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

দেশজুড়ে চলমান এই সহিংসতা ও নাশকতা ঠেকাতে বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সমস্ত বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে। সেখানে সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানো, ভেহিকল প্যাট্রোল এবং প্রহরা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে, বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। পুলিশ আনুসঙ্গিক তদন্ত চালাতে প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে। আগামী ১৩ নভেম্বরের জন্য শহর জুড়ে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং প্রবেশপথগুলোতে কঠোর নজরদারি চালানো হচ্ছে। রাজনৈতিক দিক থেকে এই সময়ে কোনও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না করার জন্য সব পক্ষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।