যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কে সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৫০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৫

সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নিরাপত্তা চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যần্বে যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কের একটি বিমান ঘাঁটিতে সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শুক্রবার রয়টার্সের বিশ্বস্ত ছয়টি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানানো হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের মিত্র এবং দীর্ঘদিনের সিরীয় নেতা বাশার আল-আসাদের শাসনামলের পতনের পর সিরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কৌশলে পরিবর্তিত হচ্ছে। মার্কিন বাহিনী এই মোতায়েন আরেকটি নির্দেশনা হিসেবে দেখছে, যা আল-শারার নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান সরকারের সঙ্গে ইসরায়েলের মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই চুক্তির অধীনে দক্ষিণ সিরিয়ার কিছু অঞ্চল শান্ত ভাবে বসবাসের জন্য মুক্তাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে, যেখানে এই বিমান ঘাঁটি অবস্থিত। এই ব্যবস্থা মধ্যস্থতা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। আগামী সোমবার হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি হবে সিরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম হোয়াইট হাউস ভ্রমণ। দেশটির নিরাপত্তা ও সামরিক অভিন্নতা লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে ওই ঘাঁটিকে ব্যবহার করতে চেয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র। রয়টার্সের সঙ্গে কথা বলা ছয়টির মধ্যে দুজন পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং একজন সিরিয়ার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা অনিসচিহ্নিত করেছেন যে, এই মোতায়েন ইসরায়েল-সিরিয়া চুক্তি পর্যবেক্ষণ করতে সহায়তা করবে। পেন্টাগন ও সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এদিকে, একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা আইএসআইএসের কার্যক্রম বন্ধ করতে সিরিয়ায় অবকাঠামোগত অবস্থান ক্রমশ দৃঢ় করছি, যেখানে আমারা বাহিনী রাখছি, তার সম্পর্কে নির্দিষ্ট কিছু জানাচ্ছি না।’ একজন পশ্চিমা সামরিক ব্যক্তিত্ব আরও বলেছেন, গত দুই মাস ধরে অদৃশ্য গোয়েন্দা অভিযান চালিয়ে এই ঘাঁটির অবকাঠামো ও সরবরাহ ব্যবস্থা সুদৃঢ় করা হয়েছে, যার ফলে রানওয়ে দ্রুত ব্যবহার উপযোগী হয়েছে। সিরিয়ার সামরিক সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনা স্তরে রসদ, নজরদারি, জ্বালানি সরবরাহ ও মানবিক কার্যক্রমের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে সিরিয়া নিজস্ব সার্বভৌমত্ব বজায় রাখবে। সিরিয়ার এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রানওয়ে পরীক্ষার জন্য মার্কিন সামরিক পরিবহন বিমানটি ঘাঁটিতে গিয়েছিল। নিরাপত্তারক্ষীদের একজন জানিয়েছেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ মার্কিন বিমান অবতরণ করেছে। তবে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সময় ও স্থান অবৈধ ছিল বলে জানানো হয়নি। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, এই নতুন মার্কিন সামরিক পরিকল্পনাগুলো লেবাননে ও ইসরায়েলে আরও দুটি নতুন উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়, যেখানে একজন হিজবুল্লাহর তত্ত্বাবধানে এবং অন্যজন ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলন ও ইসরায়েলি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে কাজ করছে। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় বহু বছর ধরে কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনী আইএসআইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। গত এপ্রিলের রিপোর্টে জানানো হয়, সেনাগুলো অর্ধেক কমিয়ে মাত্র ১০০০ সেনা সেখানে অবস্থান করছে। প্রেসিডেন্ট শারা এবারের সফরে স্পষ্ট করে বলেছেন, নতুন সিরীয় সরকার ও মার্কিন সেনাদের উপস্থিতির বিষয়ে সম্মত হওয়া জরুরি। এর পাশাপাশি, মার্কিন ও সিরিয়ার কর্মকর্তা মনে করছেন, সিরিয়া শিগগিরই আন্তর্জাতিক আইএসআইএস-বিরোধী জোটে যুক্ত হবে। সরাসরি মোতায়েনের বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অংশ হিসেবে জানানো হয়, ১২ সেপ্টেম্বর মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের (সেন্টকম) নেতৃত্বাধীন কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার দামেস্ক সফরের সময় এই ঘাঁটি স্থানান্তরের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছিল। মূলত, এই সফরে তারা সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান ও সহযোগিতা সম্পর্কে সমর্থন ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। দীর্ঘদিন ধরে অপ্রতিরোধ্য ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি আনার জন্য আমেরিকা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখ পর্যন্ত, কাজের সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে চলতি বছরের মধ্যে সিরিয়ার ওপর চাপ বাড়িয়ে চুক্তি বাস্তবায়ন করে, বিশেষ করে শারার ওয়াশিংটন সফর Before কিছু দিনের মধ্যে চুক্তির সম্ভাবনা দেখতে পায়।