যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা গাজার শাসনক্ষমতা নিতে আগ্রহী Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৪৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৫ যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা আগামী দুই বছর পর্যন্ত গাজার শাসনের দায়িত্ব গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। এর পাশাপাশি তারা গাজায় শান্তিরক্ষী বাহিনী নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক বলপ্রয়োগকারী বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছে। এই সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাব তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রের কাছে পাঠিয়েছে। অ্যাক্সিওস নামে মার্কিন একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন প্রশাসন এ বিষয়ে একটি গোপন নথির মাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, সোমবার যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কিছু সদস্যের কাছে গাজায় অন্তত দুই বছরের জন্য এক আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে। খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, এই বাহিনী ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত গাজার শাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। প্রয়োজনে এই সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব হবে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে আগামী কিছু দিনের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা চালানো হবে। লক্ষ্য—আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে এই প্রস্তাব অনুমোদন এবং জানুয়ারির মধ্যে প্রথম সেনা মোতায়েন সম্পন্ন করা। অ্যাক্সিওসের খবর অনুযায়ী, এই আন্তর্জাতিক বাহিনীকে জোরপূর্বক নিরস্ত্র করা হবে যদি হামাস তাদের স্বেচ্ছায় নিরস্ত্র না হয়। এই বাহিনীর দায়িত্বে থাকবে গাজার নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করা, সীমান্ত সুরক্ষা, সাধারণ মানুষ ও মানবিক সহায়তার জন্য করিডোর রক্ষা ও নতুন ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী প্রশিক্ষণ দেওয়া। এই পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা হবে অন্যান্য দেশের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে। বিশ্লেষকদের মতে, বাহিনীর স্থায়ী ভিত্তিতে কাজ চালাতে জোর দেওয়া হয়েছে—সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম, অবকাঠামো ধ্বংস ও পুনর্গঠনের রোধ, এবং অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্রসম্ভারের সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়করণ। যদি হামাস স্বেচ্ছায় নিরস্ত্র হতে না চায়, তাহলে এই বাহিনী জোরপূর্বক নিরস্ত্র করার দায়িত্ব নেবে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই বাহিনী গাজায় ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে সীমান্ত নিরাপদ রাখা, সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা, মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়ন ও গাজার দীর্ঘমেয়াদী প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় দায়িত্ব পালন করবে। বর্তমানে গাজার নিরাপত্তার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, বিশেষ করে যখন ইসরায়েল ধীরে ধীরে অঞ্চল থেকে সরে আসবে। এই ব্যাপারে জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া, আজারবাইজান, মিসর ও তুরস্ক এই বাহিনীতে সৈন্য পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাহিনী গঠনে ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম পরিচালনায় “মিসর ও ইসরায়েলের কাছাকাছি পরামর্শ ও সহযোগিতা” থাকবে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অনুযায়ী, বাহিনী তাদের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। খসড়ায় বলা হয়েছে, বোর্ড অব পিস তরুণ, অরাজনৈতিক ও টেকনোক্র্যাট ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি গাজার প্রশাসন পরিচালনা করবে। এই কমিটি আসন্ন সময়ের মধ্যে প্রশাসনের দৈনন্দিন কার্যক্রম চালাবে। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই কমিটি গঠনের আগে থেকেই বোর্ড অব পিস কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় মানবিক সহায়তা বিতরণ অব্যাহত থাকবে, যেখানে জাতিসংঘ, রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের মতো সংস্থাগুলোর সহায়তা থাকবে। অন্য কোনও সংস্থা যদি সাহায্য অপব্যবহার করে বা অন্যদিকে সরিয়ে নেয়, তাদের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। অন্যদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজায় সংঘটিত যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সকল পক্ষকে শান্তি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গাজায় যুদ্ধবিরতির অব্যাহত লঙ্ঘন আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এটি বন্ধ করতে হবে এবং সকলকে শান্তি রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।” SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: