সোনাইমুড়ীতে নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০২৫

সোনাইমুড়ী উপজেলার নির্বাচন অফিসে নানা ধরণের অনিয়ম ও হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। রিপোট অনুযায়ী, কিছু ভোটার তাদের ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়ায় ರೂবার ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নানা অপকর্মের কথা প্রকাশ পাচ্ছে।

৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাসলিমা আক্তার, যিনি নাজিরপুর গ্রামে থাকেন, গত ২৮ অক্টোবর সকাল ৯টায় পিতার বাড়ির ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন অফিসে যান। আবেদনকারীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব তার থেকে টাকা দাবি করেন। অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে এবং তার বৃদ্ধ মা আলেয়া বেগমকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। পরে পুনরায় রুমে প্রবেশ করলে, ওই কর্মকর্তা রাগে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। মা-মেয়ের অভিযোগে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন।

এছাড়া, সোনাইমুড়ীর উপজেলা পরিষদের ড্রাইভার মনির হোসেন, যিনি বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালান, তাঁর আত্মীয়ের ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে গিয়ে জন্ম নিবন্ধনে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে নানা রকম হয়রানি করা হয়। অভিযোগ, সেখানে একজন সরকারি কর্মচারী পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করেন এবং দুর্ব্যবহার করেন।

অন্যদিকে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পিয়ন সালাউদ্দিন জানান, তার চাচাতো ভাই মাইনুল ইসলামও ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু জন্ম নিবন্ধনে বয়সের ত্রুটি দেখিয়ে আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে, ২০ হাজার টাকা চুক্তি করে ভোটার হওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বারগাঁও ইউনিয়নের পলাশ বলেন, তার ফুফাতো ভাইয়ের নামের আগে মো. লিখে অনলাইনে আবেদন করেছেন, কিন্তু নানা অজুহাতে সেই আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগগুলোতে প্রকাশ, উপজেলায় নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব যোগদান করার পর থেকেই তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে কর্মশীলতা বাধাগ্রস্ত করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ঘুষের বোঝা চাপাচ্ছেন। দরজা বন্ধ করে বা পর্দা দিয়ে বাকিটা দেখা বা সব ধরনের কাজের জন্য অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হয়। নতুন ভোটার তালিকা তৈরি, নামে সংশোধন, ভোটার স্থানান্তরসহ সকল কাজে টাকা ঘুষের চাহিদা বেড়েছে। এই কর্মকর্তা ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা থেকে যোগদান করে এখানে আসার পর থেকেই দুর্নীতি বাড়তে থাকে। প্রবাসী ও সাধারণ ভোটাররা তাদের আইডি সংশোধন করতে গেলে নানা অজুহাত ও হয়রানি সহ্য করছেন।

অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, টাকা না দিলে কাজ হয় না, কাজের জন্য বিভিন্ন অজুহাত দেখানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি উপজেলা কর্মচারী বলন, যেখানে জন্মবৃত্তান্ত বা বয়সে ভুল থাকলে আবেদনগুলো ড্রয়ারেই রেখে দেয়া হয়। ফলে অনেকে নিরুপায় হয়ে টাকা দিয়ে ভোটার হয়ে থাকেন। এছাড়া, ঠিকানা পরিবর্তন ইস্যুতেও জটিলতা সৃষ্টি করা হয় এবং তদন্তের জন্য অতিরিক্ত টাকা চাওয়া হয়। অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, তাদের আইডি সংশোধন বা ভোটার তালিকায় স্থানান্তর করতে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় বিশৃঙ্খলা ও হয়রানি সহ্য করতে হয়েছে।

নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব বলেছেন, তিনি যোগদানের পর বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়েছে, কিন্তু তিনি অভিযোগে ওঠা নানা অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার এক বিবৃতিতে বলেন, বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগের বিষয়ে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম জানান, যদি কেউ ভোটার হওয়ার জন্য টাকা আদায়ের প্রমাণ দেন, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।