মার্কিন-চীন বাণিজ্য অগ্রগতি এশিয়ার শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০২৫ এশিয়ার শেয়ারবাজারে সোমবার শক্তিশালী বৃদ্ধির মুখ দেখেছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। আশাটি জোরদার হয়েছে বৈঠক থেকে প্রত্যাশিত ইতিবাচক ফলাফলের খবর পাওয়ায়, যা দীর্ঘদিনের বাণিজ্যবিরোধের সমাধানের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলেছে। চলতি সপ্তাহান্তে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পরে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট উল্লেখ করেছেন, চীনা পণ্য ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি এখন কার্যত অবসান হয়েছে। তার ভাষায়, “শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা থেকে দূরে থাকছি,” এবং তিনি আরও জানান, চীন বিরল ধাতু রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে বিলম্বিত করতে এবং মার্কিন থেকে উল্লেখযোগ্য সয়াবিন কেনার জন্য সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং বলেছেন, উভয় পক্ষ শুল্ক, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, ও ফেন্টানাইল সহযোগিতা বিষয়ে ‘প্রাথমিক ঐকমত্যে’ পৌঁছেছে। তিনি এ আলোচনা ‘স্পষ্ট, গভীর ও গঠনমূলক’ বলে বর্ণনা করেন। এই অগ্রগতি আগামী বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (APEC) শীর্ষ সম্মেলন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন সফরে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের পথ প্রশস্ত করেছে। ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার পর এটি হবে প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ। বৈঠক থেকে আশানুরূপ ফলের খবরের প্রভাব সোমবার সকালে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজার প্রায় দুই শতাংশ করে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাদের সাম্প্রতিক উচ্চতার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। হংকং, সাংহাই এবং তাইপেইর বাজারও ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডে লেনদেন শুরু করেছে। গত শুক্রবার ইউএস স্টকের শক্তিশালী লেনদেনের পর, এশিয়ার বাজারেও ইতিবাচক মনোভাব বিরাজ করছে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির সাম্প্রতিক তথ্য ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর পথে আরও এগিয়ে নিয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করেছে। রোববার কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন চুক্তি করতে চায়, আমরাও চাই,’ এই ভাষণে দেখা গেছে তাদের মতোই চাহিদা রয়েছে। তিনি বর্তমানে পাঁচ দিনের এশিয়া সফরে রয়েছেন, যেখানে মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকগুলো বাণিজ্য বিষয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির খবর বিশ্ববাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রে তামার ভবিষ্যৎমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বিশ্বের শিল্প ও নির্মাণখাতের চাহিদা নির্দেশ করছে। সবকিছু মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু মাস ধরে যে উত্তেজনা চলছিল, তা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার পথে। অক্টোবরে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণের প্রতিক্রিয়ায় ব্যাপক শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিয়ে ছিল, যা ছিল আমেরিকান অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করার পেছনে। তবে সর্বশেষ অগ্রগতি এসব উত্তেজনা কমানোর পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বেসেন্টের ভাষায়, ‘চীনা পক্ষ এক বছর বিরল মৃত্তিকা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখবে, তাহলে পরবর্তীতে পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা হবে।’ বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অগ্রগতির বাস্তবায়ন হলে তা শুধু মার্কিন ও চীন নয়, বরং পুরো এশীয় অর্থনীতির জন্যই ইতিবাচক বার্তা বহন করবে। SHARES অর্থনীতি বিষয়: