মার্কিন-চীন বাণিজ্য আলোচনা দ্রুতগতিতে এগিয়ে এশীয় শেয়ারবাজারে বৃদ্ধি

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৩:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২৫

এশিয়ার শেয়ারবাজারে সোমবার শক্তিশালী বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, কারণ বিনিয়োগকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এই ইতিবাচক অগ্রগতি বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য আশার সংকেত হয়ে উঠেছে, যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাণিজ্য বিরোধের অবসান সূচিত করতে পারে।

সপ্তাহান্তে মালয়েশিয়া অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ঘোষণা করেন, চীনা পণ্যের উপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি এখন কার্যত ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, শুল্ক আরোপ এড়াতে উভয় পক্ষই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও, চীন বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি স্বীকার করেছেন যে, চীন বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণের বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে মতৈক্য তৈরি হয়েছে এবং দেশটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সয়াবিন কিনতে সম্মত হয়েছে।

অন্য দিকে, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লাইফেং বলেছেন, উভয় দেশ শুল্ক, রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ এবং ফেন্টানাইল নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ন্যায়সংগতভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, আলোচনা অনেক স্পষ্ট, গভীর ও গঠনমূলক ছিল।

এই অগ্রগতির ফলে আসন্ন বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার মনোয়েজে অনুষ্ঠিত এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (APEC) শীর্ষ সম্মেলন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক সহজ পথে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ট্রাম্পের ফের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হবে।

এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজারে এই উন্নতিকে বিশ্লেষকদের মধ্যে এক নেতিবাচক অনুভূতি ভেঙে ফেলেছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ারবাজার দুই শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেছে এবং তারা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, হংকং, সাংহাই এবং তাইপের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী লেনদেন শুরু করেছে।

গত শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিটের শক্তিশালী বাজারের পর এশিয়ার বিনিয়োগকারীরাও ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতির তথ্য ফেডারেল রিজার্ভকে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বেড়েছে।

রোববার কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘তারা (চীন) চুক্তি করতে চান, আমরাও চাই।’ তিনি এশিয়া সফরে রয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে মালয়েশিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া, যেখানে বাণিজ্য দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।

এর ফলে বৈশ্বিক বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রে তামার মূল্য বেড়ে গেছে, যা বোঝায় শিল্প ও নির্মাণ খাতে চাহিদা বাড়ছে।

উত্তেজনা দীর্ঘদিন চলে আসলেও, চলতি বছর অক্টোবরে ট্রাম্প প্রশাসনের চীনের বিরল মৃত্তিকা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণের পর অট্টালিকা তৈরি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে, যা দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। ট্রাম্পের ভাষায়, চীন এক বছরের জন্য বিরল মৃত্তিকা নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রাখবে, পরবর্তী মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই অগ্রগতি বাস্তবায়িত হলে, তা শুধু মার্কিন-চীনের জন্য নয়, পুরো এশীয় অর্থনীতি জন্যও ইতিবাচক বার্তা নিয়ে আসবে।