সিরাজগঞ্জে এইচআইভি রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৫৫, ২৬ জনের মৃত্যু Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ১:৩২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২৫ সিরাজগঞ্জে এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৫৫ জনের শরীরে এইচআইভি শনাক্ত হয়েছে। শুধুমাত্র এই বছরে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা পুরো এলাকার চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষকে মনে দাগ কাটছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সুশীল সমাজের মধ্যেও এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই তথ্য জানা গেছে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের এইচআইভি কেন্দ্রের সূত্র থেকে। জানা যায়, ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে সিরাজগঞ্জে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম দিকে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ জনে। যার মধ্যে প্রায় ৭৩ শতাংশই মাদকসেবী। ডাক্তাদের মতে, এই রোগে আক্রান্তের বেশির ভাগই অবৈধ মাদক ইনজেকশনের মাধ্যমে সংক্রামিত। ২০২০ সালে করোনার প্রথম বছর চারজন, ২০২১ সালে আটজন, ২০২২ সালে ৮১ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এবার তা আবার হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। সিরাজগঞ্জের এইচআইভি টেস্টিং ও কাউন্সেলিং সেন্টারের কাউন্সেলর মাসুদ রানা জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অবৈধভাবে চলনশীল ইনজেকশন আমদানির মাধ্যমে এই রোগ বিস্তার লাভ করছে। আক্রান্তদের বিনামূল্যে মেডিক্যাল চিকিৎসা, ওষুধ, এবং কাউন্সেলিং দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮৭ জন মাদকসেবী, ৩৫ জন সাধারণ মানুষ, ২৯ জন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া, এবং চারজন যৌনকর্মী। তারা জানান, আক্রান্তের প্রথম পরীক্ষায় ফলাফল পজিটিভ হলে তাদেরকে চিকিৎসকের কাছে আসতে বলা হয় ও পুনরায় রি-টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, বাকিরা নিয়মিত ওষুধ ও চিকিৎসা পেয়ে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছেন। সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকিকুন নাহার বলেন, সমাজের নিম্নআয়ের মানুষরাই বেশি ইনজেকশন শেয়ার করে মাদক গ্রহণ করছে। এই একই সিরিঞ্জের মাধ্যমে মাদকশোকারা একে অন্যের রক্তের সংস্পর্শে আসার কারণে এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, আক্রান্তদের মনোবল বাড়ানোর জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে। তবে এই অবস্থায় ইনজেকশনে ড্রাগের ব্যবহার কমাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অবৈধ ইনজেকশন বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুই বছরে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৯০০ অ্যাম্পুল ইনজেকশন ড্রাগ জব্দ করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে যাতে আরও বেশি করে অবৈধ ড্রাগের ব্যবসা বন্ধ করা যায়। SHARES সারাদেশ বিষয়: