যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রপ্তানি ৪০ শতাংশ কমেছে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্যের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের রপ্তানি আরও ২০ শতাংশ কমেছে, আর গত চার মাসে এই পতনের হার মোট ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া নতুন শুল্ক কাঠামোর পুরো প্রভাব সেপ্টেম্বর মাসে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধে ভারতের দায়ের অস্বীকৃতি ও অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা।

দিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, শুল্ক বৃদ্ধির পর যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাজারে পরিণত হয়েছে।

জিটিআরআইয়ের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শ্রমনির্ভর খাতগুলোর মধ্যে বস্ত্র, রত্ন ও আর্থিক গয়না, প্রকৌশলজাত পণ্য ও রাসায়নিক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব খাতে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

২০১৯ সালের মে মাসে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছিল ৮.৮ বিলিয়ন ডলার, যা সেপ্টেম্বর নাগাদ কমে দাঁড়ায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলারে। এর অর্থ, রপ্তানির পরিমাণ শতকরা ৩৭.৫ শতাংশ কমে গেছে। চার মাস ধরে রপ্তানি ধীরে ধীরে কমে যাওয়ায় ভারতের বাণিজ্য ঘাটতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই ঘাটতি ছিল ৩২.১৫ বিলিয়ন ডলার, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি কিছুটা সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

গত মাসে, দীর্ঘ বিরতির পরে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা আবার শুরু হয়েছে। এ আলোচনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে अगले মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা। বর্তমানে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে সফরে রয়েছে।

বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিশ্চিত করেছেন যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে। ওয়াশিংটন মনে করছে, এর মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর ক্রেমলিনের উপর অর্থনৈতিক চাপ তৈরি করা যাবে।

এদিকে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জ্বালানি সম্পর্ক উন্নয়নে আলোচনা চলছে এবং মার্কিন প্রশাসন এই বিষয়টিতে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তবে, কৃষি ও দুগ্ধ খাতের বাজার প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত পরিস্থিতি এখনো জটিল। বহু বছর ধরে ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতকে সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবে দেখলেও, নয়াদিল্লি খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষকের জীবনমান ও অভ্যন্তরীণ বাজার রক্ষা করার স্বার্থে এই খাতকে অটুট রাখতে চায়।

খুব আগে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার ছিল। ২০২৪ সালে দুই দেশের মোট বাণিজ্য দাঁড়িয়েছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প ও মোদি দুজনই এই অঙ্ককে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন। তবে, সাম্প্রতিক শুল্কযুদ্ধ এই লক্ষ্য অর্জনে বড় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।