তালিকা সই হবে ঐতিহাসিক জুলাই সনদ আজ Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২৫ অবশেষে বহু প্রত্যাশিত ও ঐতিহাসিক ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ আজ স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানটি আজ শুক্রবার বিকাল ৪টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বাক্ষর কার্যক্রমের শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী এই সনদ স্বাক্ষরের জন্য একটি জরুরি সভা আহ্বান করেন। সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশগ্রহণ করেন, যা জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ সারা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে, যেখানে মোট ৪০ পৃষ্ঠা বিশিষ্ট এই সনদে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি রূপারেখা করা হয়েছে। এতে ব্রিটিশ শাসন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও, এই সনদে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫ সালের সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাসও স্থান পেয়েছে। সনদে বলা হয়েছে, ১৯৭৮ সালে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় স্বাধীনতার পরের গণতন্ত্রের নতুন ধারা, যার পর ১৯৭৯ সালের সংসদীয় নির্বাচন এবং এর ফলস্বরূপ ১৯৭৫ সালের পরগণতন্ত্র ফিরে আসে। তবে, এই গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ততদিন স্থায়ী হয়নি। সনদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যক্তি, পরিবার এবং গোষ্ঠীর স্বৈরাচারী ক্ষমতা বিস্তার ও আধিপত্য ছিল, যা দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের পথে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অতীতে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের সমালোচনাও এই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, এগুলো নির্বাচন ব্যবস্থা দুর্বল করে দেয়, বিচারবিভাগ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও জনপ্রশাসনকে রাজনীতিকরণ করে, এবং দুর্নীতিকে সহজ করে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১৬ বছরের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফলে বিভিন্ন আন্দোলন ও প্রতিবাদ উঠে এসেছে, যেমন ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা আন্দোলন, কোটা বিরোধী আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন বৈষম্যবিরোধী প্রতিবাদ এবং ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিশাল গণঅভ্যুত্থান। সবশেষে, এই সনদে একটি সাত দফা প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের এই তিসই স্বাক্ষর করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে গণতান্ত্রিক নীতি ও জাতীয় ঐক্যের ওপর ভিত্তি করে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে আরও সুসংহত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র: বাসস SHARES জাতীয় বিষয়: