জাতিসংঘের বাজেট কমে যাওয়ায় ১৩১৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ফিরে আসছেন

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২৫

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বড় আকারে প্রভাব পড়েছে। বাজেট হ্রাসের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এখন থেকে ৫টি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশি ১৩১৩ জন শান্তিরক্ষীকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত করেছেন সেনা, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরা।

গত ১৪ অক্টোবর জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স কার্যালয়ের (ওএমএ) ভারপ্রাপ্ত সামরিক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেরিল পিয়ার্স বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে চিঠি পাঠিয়েছেন। এই চিঠি বাংলাদেশের সামরিক উপদেষ্টা ও জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে পাঠানো হয়। চিঠির স্বাক্ষর করেন ওএমএ’র চিফ অব স্টাফ ক্যাপ্টেন লনি ফিল্ডস জুনিয়র, এবং খসড়া প্রস্তুত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানবির আলম, যিনি কার্যালয়ের মিলিটারি পিস অপারেশন সাপোর্ট শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকেন।

চিঠিতে জানানো হয়, মহাসচিবের নির্দেশে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাজেটে ১৫ শতাংশ হ্রাস কার্যকর করা হচ্ছে। এর ফলে ইউনিফর্ম পরিহিত সদস্যদের জন্য বরাদ্দ অর্থ কমবে এবং মাঠে শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা কিছুটা কমে যাবে।

প্রত্যাহার হওয়া বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের সংখা অনুযায়ী তালিকা হলো:
– ইউএনমিস (দক্ষিণ সুদান): ৬১৭ জন
– মিনুসকা (মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র): ৩৪১ জন
– ইউনিসফা (সুদানের আবেই অঞ্চল): ২৬৮ জন
– মনুসকো (কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র): ৭৯ জন
– মিনুরসো (পশ্চিম সাহারা): ৮ জন

চিঠিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘের লজিস্টিক বিভাগ, ইউনিফর্মড ক্যাপাবিলিটিজ সাপোর্ট বিভাগ ও মিশন সাপোর্ট বিভাগ সমন্বয় করে কাজ করছে, যাতে প্রত্যাহার কার্যক্রম সুষ্ঠু ও দ্রুত সম্পন্ন হয়।

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সূচনা হয় ১৯৮৮ সালে, তখন মাত্র ১৫ জন পর্যবেক্ষক দিয়ে শুরু হয়। পরের বছর বাংলাদেশ পুলিশ যোগ দেয়, এবং ১৯৯৩ সালে নৌ ও বিমানবাহিনীও মিশনে অংশ নেয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রায় ৪৩টি অঞ্চলে মোট ৬৩টি শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়েছে, যেখানে মোট ১,৭৮,৭৪৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের ১০টি অঞ্চলে ৫,৬১৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, এর আগে কঙ্গো থেকে বাংলাদেশ পুলিশের অতি গুরুত্বপূর্ণ কন্টিনজেন্ট প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এই কন্টিনজেন্টে ১৮০ জন সদস্য ছিলেন, যার মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ। তারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরবেন।