চার বছরেও শেষ হয়নি রাঙামাটির গুরুত্বপূর্ণ সেতুর নির্মাণ, যাত্রা করছে ঝুকিপূর্ণ বিকল্প পথ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৫

পরপর দুই দফায় সময় বাড়ানো সত্ত্বেও চার বছর অতিক্রম করেও সম্পূর্ণ হয়নি রাঙামাটির কুতুকছড়ি সেতুর নির্মাণকাজ, যার ফলে স্থানীয় লাখো মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। কাজের ধীরগতির কারণে রাঙামাটি-মানিকছড়ি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি রোডে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ বিকল্প সড়ক ও অস্থায়ী সেতু ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে, যা দুর্ঘটনা ও যানজটে পরিণত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খাদ্য ও ঔষধের সরবরাহ, জরুরি চিকিৎসাসেবা ও সাধারণ চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় নির্মাণাধীন এই সেতুটি উত্তর ও দক্ষিণ পার্বত্য চট্টগ্রামকে সংযুক্ত করছে গুরুত্বপূর্ণ একটি আঞ্চলিক মহাসড়কের অংশ। ২০২২ সালের ১১ আগস্ট কাজের শুরু হলেও, ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রথম সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও অগ্রগতি মাত্র ৩৫ শতাংশ। কাজের ধীরগতির কারণ হিসেবে নদীর পানি বৃদ্ধি এবং অন্যান্য প্রতিকূলতাকে দেখানো হচ্ছে। বর্তমানে নির্মাণস্থলে অস্থায়ী ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে, যা চলাচল বিপজ্জনক করে তুলছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ভাঙা রাস্তায় রোগী ও মেডিকেল টিমের চলাচল অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। নতুন নির্মাণাধীন এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৮১.৩১৫ মিটার এবং এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ২৯ লাখ টাকা। ২০২১ সালে পুরনো বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর নতুন এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো—‘সরদার এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘রাঙামাটি ট্রেডার্স’—টাকার পাওয়ায় ও পানি বৃদ্ধির কারণে কাজের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বললেও, স্থানীয় শ্রমিক ও প্রকৌশলীগণ বলছেন, পানি কমলে দ্রুত কাজ সম্পন্নের জন্য তারা প্রস্তুত। রাঙামাটি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী নিজাম উদ্দিন মিশু জানান, পানি থাকায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে, তবে পানি কমলে যথাসম্ভব দ্রুত কাজ সম্পন্নের চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে, রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করার পরও অগ্রগতি এখনো মাত্র ৩৫ শতাংশ। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, তারা চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন এবং অনুমোদন পেলে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি পাহাড়ের কৃষিপণ্য, ফলমূল ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম। দীর্ঘ সময় ধরে বানচাল থাকা এই প্রকল্পের কারণে স্থানীয় পর্যটন ও ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর জীবনযাত্রাও কঠিন হয়ে পড়ছে।