বাংলাদেশের গ্রামীণ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) মোট ১০ কোটি ডলার (প্রায় এক হাজার কোটি টাকা) অর্থাৎ বিশাল এ ঋণ সহায়তা দেবে। এই অর্থের মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে অবস্থিত ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও ব্যবসাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য রয়েছে। সংস্থাটি এই ঋণ নিজেদের একটি প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করবে, যার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও এডিবির মধ্যে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ইআরডি কার্যালয়ে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির বাংলাদেশে নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং। সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ‘সেকেন্ড স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম-সাইজড এন্টারপ্রাইজেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ফেজ-২)’ নামে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই প্রকল্পটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা, পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদনকে উৎসাহিত ও নতুন বাজার সৃষ্টি করার জন্য সহায়ক হবে, যার ফলে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। এছাড়াও, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাইরে থাকা উদ্যোক্তাদের ব্যাংকিং সুবিধা দেওয়া যাচ্ছেনা—এমন বাস্তবতা বিবেচনা করে এডিবি এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে টেকসই ও কার্যকর ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

প্রকল্পের অংশ হিসেবে ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা উন্নত করা হবে। এটি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক, তাদের ব্যাংক ঋণ ও আর্থিক সুবিধায় প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ, সবুজ অর্থায়ন ও ভ্যালুচেইন-ভিত্তিক পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।

এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বলেন, বাংলাদেশ অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও টেকসই করতে কাজ করছে, যার কেন্দ্রবিন্দু হলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতের বিকাশ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের মালিকানাধীন গ্রামীণ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য মূলধন সহজলভ্য হবে, পাশাপাশি তাদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বর্তমানে ৬৯টি দেশের মালিকানাধীন। এটি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।