নির্বাচনের অপেক্ষায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা, মনে করছে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঝুঁকিতে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাই নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও যারা ভবিষ্যতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, তারা সবাই অপেক্ষায় রয়েছেন নির্বাচন শেষ হওয়ার জন্য। তিনি বলছেন, পরিষ্কার ভাষায় বলতে গেলে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের সময় পর্যন্ত সব সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন। নির্বাচন শেষে যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তখনই তারা বাংলাদেশের ব্যবসায় ও অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবেন। অনেক বিদেশি ও দেশের ব্যবসায়ীরা এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন, তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, নির্বাচনের পরই বিনিয়োগের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

গতকাল রোববার, রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে দলের নেতারা ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে আমীর খসরু এসব তথ্য জানান। বৈঠকটি শুরু হয় বিকেল পাঁচটায়, যেখানে বিভিন্ন ব্যাপারে আলোচনা হয়।

ব্যবসা ও বিনিয়োগের প্রসঙ্গ তুলে আমীর খসরু বলেন, আমাদের দেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, এক হলো এলডিসি গ্র্যাজূয়েশন বা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ এবং অন্যটি শ্রম সংক্রান্ত সমস্যা। তিনি উল্লেখ করেন, বোঝাপড়া অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবসায় ও বিনিয়োগের জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত নয়। এতে করে আগামীর অর্থনীতি ও বিনিয়োগের প্রবণতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এলডিসি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশের প্রস্ততি সঠিকভাবে নেওয়া হচ্ছে না বলে মনে করেন আমীর খসরু। তিনি আরও বলেন, বাংলদেশের অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও ব্যবসার উন্নয়নের জন্য এই মুহূর্তে এলডিসি থেকে উত্তরণের পিছিয়ে দেওয়া জরুরি। এ জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি চিঠি দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে, তৈরী পোশাকশিল্পের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, এ মুহূর্তে তাদের বড় উদ্বেগ এলডিসি গ্র্যাজ্যুশনের ডিফারমেন্ট ও শ্রম আইন সংশোধন। বিশেষ করে, শ্রমিকদের জন্য নূন্যতম ২০ জন শ্রমিকের উপস্থিতিতে ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে এজন্য বিএনপির সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম নিউইয়র্ক যাচ্ছেন, যেখানে তিনি উপদেষ্টাদের সঙ্গে এসব ব্যাপারে আলোচনা করবেন। আমাদের মূল লক্ষ্য, এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য প্রস্তুত থাকা—শুধু তা তিন বছর পিছিয়ে দিতে চাই, কারণ এখনই আমরা প্রস্তুত নই।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের তপন চৌধুরী, এপেক্স ফুটওয়্যারের সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কামরান টি রহমান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, ঢাকা চেম্বার সভাপতি তাসকিন আহমেদ, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি ফজলে শামীম এহসান ও নেক্সাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসেন।