লিবিয়ার উপকূলে নৌকায় আগুন, নিহত ৫০ সুদানি শরণার্থী

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫

লিবিয়ার উপকূলে সুদানি শরণার্থীবাহী একটি নৌকায় আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, ওই নৌকাটিতে মোট ৭৫ জন শরণার্থী ছিলেন, যখন দুর্ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার আল-জাজিরা এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে। আইওএম উল্লেখ করেছে, বেঁচে যাওয়া ২৪ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি আরও বলেছে, সমুদ্রপথে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। এর আগে সম্প্রতি এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটেছে। গত মাসে ইয়েমেনের উপকূলে একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ৬৮ শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু হয়, অনেকেই নিখোঁজ থাকেন। আইওএম-এর তথ্যমতে, শুধু গত বছরই ভূমধ্যসাগরে ২ হাজার ৪৫২ জন অভিবাসী বা শরণার্থী মৃত্যু কিংবা নিখোঁজ হয়েছেন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সমুদ্রপথগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটি আফ্রিকা থেকে ইউরোপগামী শরণার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে। গাদ্দাফির আমলে অনেক আফ্রিকান মানুষ লিবিয়ায় কাজ করতেন, কিন্তু তাঁর পতনের পর দেশটিতে বিভিন্ন মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়। গত আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছাকাছি দুটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে জুন মাসে লিবিয়া উপকূলে দুটি জাহাজডুবিতে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু বা নিখোঁজ হন। মানবাধিকার সংস্থা ও ইউনাইটেড নেশন্সের বিভিন্ন সংস্থা জানায়, লিবিয়ায় আটকে পড়া শরণার্থী ও অভিবাসীরা নিয়মিতভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও অর্থাধিকারের শিকার হচ্ছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে অভিবাসন রোধে সরঞ্জাম ও অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তবে, অভিযোগ উঠেছে যে এই কোস্টগার্ডের বেশ কিছু সদস্যই নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত। এনজিওগুলো বলছে, সরকারী সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কার্যক্রম কমিয়ে দেওয়া এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সীমিত করার ফলে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের জীবন আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে যুদ্ধ, সংঘাত ও নির্যাতন থেকে পালানো অসংখ্য মানুষ লিবিয়ার অমানবিক পরিস্থিতিতে আটকা পড়ে জীবন যাপন করছে।