আজ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫

আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন হচ্ছে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশজুড়ে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা এবং বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচি পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের এই দিনে দলটি গঠন করেন, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। তিনি ছিলেন দলের প্রথম চেয়ারম্যান।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সময় জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এর পর থেকে দলের নেতৃত্ব বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হলেও মূল লক্ষ্য ও আদর্শের ধারাকে ধরে রাখে বিএনপি। ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধবিধ্বস্ত সময়ে দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি বর্তমানে দলের চেয়ারপারসন। পাঁচ বছর ধরে তিনি কারাবন্দী থাকলেও দলকে শক্তি ও নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন, তবে দলের জন্য সবসময় নিবেদিত থাকেন এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

আজকের দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সকাল ছয়টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে পতাকা উত্তোলন করা হবে। Bíবেহেলা ১১টায় শহীদ জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এই অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন। এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও বিশাল র‍্যালির আয়োজন থাকছে।

বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান his নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক বার্তায় বলেন, জনগণের অধিকার, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই এখন দলের মূল লক্ষ্য। তিনি জানিয়েছেন, ১৯৭৮ সালে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ জননেতা জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই দিনটি দেশের মানুষ জন্য বিশেষ আবেগ ও প্রেরণার। বিএনপি সঠিকভাবে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা, সার্বভৌমত্ব বজায় রাখা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি উল্লেখ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পরই একদলীয় বাকশালী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করে। সেই সময়ের আওয়ামী শাসন ব্যবস্থায় সহিংসতা, রাজনৈতিক হিংসা ও হত্যাকাণ্ড সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায়, স্বাধীনতার স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়ে। বাকশাল কায়েম করে স্বৈরশাসন এবং সংবাদ ও বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করে সরকার।

জিয়াউর রহমান পুনরায় বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং নাগরিক স্বাধীনতাও নিশ্চিত করেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি বিগত ৪৭ বছরে দেশে নানা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে।

বিরূপ চক্রান্তের মধ্যেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে বিএনপি অবিরত কাজ করে যাচ্ছে। নির্বাসিত হলেও দলটি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮০ দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে দলের নেতৃত্বে ছিলেন তারেক রহমান। ১৯৯১ সালে যখন দল নির্বাচিত হয়ে সংসদে গিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজ করে, তখন দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি বারবার গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দলটির আদর্শের ভিত্তি উদারনীতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতিতে অনুপ্রাণিত। দেশের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, ব্যাংক ঋণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এঁকেছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

অবশেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, জনগণের আস্থা দীর্ঘস্থায়ী রাখতে বিএনপি দেশের সেবায় নিবেদিত থাকবে। যারা দলের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে আইনের শাসন, স্বাধীন মত প্রকাশ, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগ মুক্ত থাকবে। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে দল অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি দেশের গুম-খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারীর ওপর সহিংসতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকাটাও গুরুত্ব দেন।