বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপনের আহ্বান ঢাকা চেম্বার থেকে Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫ ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেছেন, দেশের বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে এবং বাণিজ্যিক বিরোধগুলোর ঝামেলামুক্ত সমাধান নিশ্চিত করতে একটি ‘কমার্শিয়াল কোর্ট’ স্থাপন করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও উল্লেখ করেন, অভিজ্ঞ বিচারকদের নিয়োগের মাধ্যমে এই আদালত চালু করলে আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কমবে এবং বিনিয়োগকারীরা বিস্তারিত ও দ্রুত আইনি সেবা পাবেন। তাসকীন আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাড়তি চাপ থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ব্যবসায়িক চুক্তি, বিনিয়োগ ও মেধাস্বত্ত্ববিষয়ক বিরোধের সমাধান আরও দ্রুত ও কার্যকরী করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি আলাদা কমার্শিয়াল কোর্ট প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তিনি এই বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ার সংস্কার জরুরি বলে মনে করেন। মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ‘ব্যবসায় বিরোধ নিষ্পত্তি ও চুক্তি প্রয়োগ কার্যক্রমের অগ্রগতি’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ সব কথা বলেন। ওই সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুর রহিম খান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের জনসংখ্যার কারণে আদালতগুলোতে মামলার সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা আরও বাড়ছে, যা আমাদের বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তিনি জানান, ২০০১ সালে আরবিট্রেশন আইন চালু হলেও দেশের বাণিজ্যিক পরিবেশ এখনো সেই প্রত্যাশিত উন্নতি দেখাতে পারেনি। তিনি আশ্বাস দেন, দ্রুত কমার্শিয়াল কোর্ট স্থাপনের জন্য কাজ চলছে, এবং এক মাসের মধ্যেই এর খসড়া চূড়ান্ত হবে। বিচারকদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই আইনি সংস্কার কার্যক্রমে জোরদারভাবে কাজ করছে, যা দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা দেশের বিদেশি বিনিয়োগ ও রপ্তানি সম্প্রসারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া, তিনি বলেন, বাণিজ্য বিরোধসমূহে প্রথাগত আদালতে না গিয়ে দ্রুত আরবিট্রেশন প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়া গেলে এর ফলাফল আরও ভালো হবে। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার বলেন, ব্যবসায়িক চুক্তি ও বিরোধ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়ায় এখনো আমাদের অনেক পিছিয়ে। বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য এই ক্ষেত্রটি আরও শক্তিশালী ও দ্রুততর হওয়া দরকার, যেন দেশের অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হয়। আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিডা মহাপরিচালক মো. আরিফুল হক, ইউএনডিপি বাংলাদেশের উপ আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দা রত্নে, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার (বিয়াক)-এর প্রধান নির্বাহী কে.এম. মাজেদুর রহমান, সিঙ্গাপুরের রাজাহ অ্যান্ড থান-এর কো-হেড ভিকনা রাজা, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ অফিসার বিচারপতি তারেক মোয়াজ্জেম হোসেন ও ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড এসোসিয়েটসের পার্টনার ব্যারিস্টার তানিম হোসেন শাওন। ঢাকা চেম্বার সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে সরকারের আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের অভাব রয়েছে, যা উন্নয়নের প্রধান প্রতিবন্ধক। তিনি আরও বলেন, আদালতের পরিবর্তে আরবিট্রেশন সেন্টারের মাধ্যমে বিরোধ সমাধানে বেশি মনোযোগ দেওয়া দরকার। এর ফলে বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগ বাড়বে এবং দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সংগঠনের অন্যান্য নেতারা জানিয়েছেন, এই সকল উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। SHARES অর্থনীতি বিষয়: