আজ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫

আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তার ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, র‍্যালি এবং নানা কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দিন ১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠন করেছিলেন, যা তার প্রতিরোধ ও দেশের গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তিনি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, যিনি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে শহীদ হন জিয়াউর রহমান। তার হত্যার পর নানা চড়াই-উতরাই পার করে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তার সহধর্মিণী, বর্তমান দলের ক্রীড়ানন্দ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দলের চেয়ারপারসন হিসেবে দলের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক সরকারের সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয়।

বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারেক রহমান, যিনি ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি দক্ষতার সঙ্গে দলের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

আজকের এই দিনটিতে সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব জেলা ও মহানগরীতে দলীয় পতাকা উত্তোলন, নেতাদের শ্রদ্ধা নিবেদন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের প্রতি সম্মান জানানো হবে। এছাড়া, সকাল ৬ টা থেকে আলোচনা সভা এবং বেলা ১১ টায় তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। এই দিনটি দলের নেতাকর্মী, ভ্রাতা-ভন্ত্রীরা বিভিন্ন র‌্যালি ও মহড়ায় অংশ নেবেন।

গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের স্বৈরতান্ত্রিক শাসন, গণতন্ত্রের অবক্ষয় আর মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদী আদর্শের সঙ্গে জনগণকে একত্রিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। এই দিনটি বাংলাদেশি মানুষের জন্য গর্ব ও উৎসাহের দিন।’’

তারেক রহমান আরও উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পরই একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতন্ত্র ধ্বংসের ঘটনা ঘটে, যেখানে সহিংসতা, রাজনৈতিক হত্যা ও দুর্ভিক্ষ সাধারণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু জিয়াউর রহমান আবার বহুমাত্রিক গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনে এবং নাগরিক স্বাধীনতা পুনঃস্থাপন করেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি কমাবছর ধরে নির্বাচন ও দেশ পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি চলমান সংগ্রামে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অপ্রতিরোধ্যভাবে দায়িত্ব পালন করছে। বহু নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। বিগত ৪৭ বছরে বিএনপি দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন অগ্রগতি সাধন হয়েছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছে।’’

অন্তরে গভীর অনুভূতির সঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘‘জনগণের আস্থা অটুট রাখতে বিএনপি দেশের সেবায় নিবেদিত থাকবে। যারা দলের জন্য জীবনদান করেছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। আমরা অঙ্গীকার করছি, সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবো।’’ তিনি শেষত: দেশ থেকে গুম, অপহরণ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বিরুদ্ধেও জোরালো পদক্ষেপের আহ্বান জানান।