ইসি ১০ লাখের বেশি কর্মকর্তাকে নির্বাচনের জন্য প্রশিক্ষণ দেবে

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৫

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই প্রশিক্ষণের মধ্যে মূল লক্ষ্য হলো ১০ লাখের বেশি প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং ও অন্যান্য কর্মকর্তাকে নির্বাচন সংক্রান্ত বিস্তারিত ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিভিন্ন গ্রুপে শুরু হয়েছে এবং ভোটগ্রহণের দৃশ্যত চার-পাঁচ দিন আগে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে, ताकि সব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সময়মতো সম্পন্ন হয়।

নির্বাচন কমিশনের ইলেকটোরাল ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটের (ইটিআই) মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, এই প্রশিক্ষণে মোট ২৩ ধরনের কার্যক্রমে কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে। প্রাথমিক এ training গুলো প্রায় চার মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে, তবে মূল ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুতিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণে। ইসি সচিবালয় জানিয়েছে, এই সকল কর্মকর্তার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখের বেশি।

আসাদুজ্জামান বলেন, এবার নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ কিছুটা আলাদা। বিগত তিন নির্বাচনের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে এবার আমরা ফ্রেশ লোকদের দিয়ে নির্বাচনী কাজ পরিচালনা করার পরিকল্পনা নিয়েছি। নতুন কর্মচারীরা ভোটের ধারণা কম থাকায় তাদের প্রশিক্ষণের গুরুত্ব অনেক বেশি। পাশাপাশি ভোটার তালিকা হালনাগাদ বেশকিছু চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে, তাই আরও দক্ষ ও প্রশিক্ষিত লোকের প্রয়োজন অনুভব করা হচ্ছে। এর ফলে একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সংগঠনের লক্ষ্য রয়েছে।

নির্বাচনী রোডম্যাপে বিস্তারিত পরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন কমিশন ট্রেনিং অব কোর ট্রেনিং (টিওটি) ও অন্যান্য প্রশিক্ষণের জন্য কার্যক্রম শুরু করবে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ট্রেইনারগণ ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন বিভাগের কর্মকর্তা, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, পুলিশ ও অন্যান্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা।

এছাড়া, মাঠ পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ ও ব্রিফিংও পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন হবে। নির্বাচনের পূর্ব, দিন ও পরে বিভিন্ন সময় এসব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, এই প্রশিক্ষণ দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং এর মধ্যে কোর প্রশিক্ষণ ও ট্রেইনিং অব কোর ট্রেনিং অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশে বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজারের ওপরে।

নির্বাচনী ট্রেনিংয়ে নতুনত্বের বিষয় হিসেবে বিশেষ দুটি পার্টের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রথমত, নির্বাচন আইনি ও বিধি-বিধান শেখানো, দ্বিতীয়ত, কাজের প্রক্রিয়া ও ভোট কেন্দ্রের মালামাল সংগ্রহ থেকে গণনার পুরো প্রক্রিয়া শেখানো। তৃতীয়ত, কর্মচারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও মোটিভেশন বাড়ানোর জন্য ব্যতিক্রমধর্মী কার্যক্রম। এর মাধ্যমে প্রিসাইডিং অফিসাররা নিজেদের মনে করবেন যেন তারা কেন্দ্রের ‘চিফ ইলেকশান কমিশনার’ হিসেবে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা সম্ভাব্য সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হবে।

আসাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচন একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এ কাজে যত বেশি প্রপ্লার ট্রেনিং প্রদান করা হবে, ততই সমস্যা কম হবে। সবাই যেন দায়িত্বপ্রাপ্তরূপে সততা, নিরপেক্ষতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা সহকারে কাজ করতে পারে, সেটাই এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য। এর ফলে সুষ্ঠ, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।