নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয় দেশকে বিরাজনীতিকরণে: মির্জা আব্বাস Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২৫ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন যে, আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশকে নিজস্ব রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দিতে এবং বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি মুক্ত করতে দেশি ও বিদেশি মহলের প্ররোচনায় আবারও একটি নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ কার্যকর হচ্ছে। তিনি ভাষ্য দেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, খাগড়াছড়ির সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালকে কেন্দ্র করে কিছু ষড়যন্ত্রকারী দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বার্থের বিরুদ্ধে অশুভ উদ্দেশ্য ধারণ করে শক্তি প্রয়োগ করতেছেন। এছাড়াও তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, বেশ কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন অজুহাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এবং এই চক্রান্তকারীদের সুবিধা দিতে চাচ্ছে। বিএনপির এই নেতা সতর্ক করে বলেন, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন না করেন, তবে দেশ বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আব্বাস উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন নতুনভাবে চালু হয়েছে এক ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’, যা ১/১১ সময়ের মতোই। সেই সময় এটি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর মাধ্যমে কার্যকর হয়েছিল। এবারও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা ভিন্ন আকারে একই অপচেষ্টায় লিপ্ত। তিনি বলেন, এসব অপতৎপরতার অংশ হিসেবে একটি গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে বিএনপিকে ‘অবিশ্বস্ত’ বা ‘খারাপ’ দল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে। অভিযোগ করেন, এখনো প্রশাসনের কিছু আওয়ামীপন্থি ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক গোষ্ঠীর একাংশ বিএনপিকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য সক্রিয়। তারা মনে করছেন, আওয়ামী লীগ যখন দেশের বাইরে রয়েছে তখন বিএনপিকে সরিয়ে দেওয়াই সবার জন্য স্বার্থকর। আব্বাস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তারাই নিজেদের স্বার্থে চারদিক থেকে ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। ১/১১-র মতোই এবারও দেশি-বিদেশি মহলের পরিকল্পনায় এই ফর্মুলা বাস্তবায়িত হচ্ছে। পেছনে রয়েছে শক্তিশালী দেশি-বিদেশি মাস্টারমাইন্ডের যোগসাজশ। তাঁর মতে, এই ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ্য হলো বিএনপিকে দুর্বল বা সরিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নেওয়া। আব্বাস বলেন, অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থক আমলারা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন, কারণ তারা মনে করছে, বিএনপিকে রাজনীতি থেকে সরালে তাদের ব্যক্তিগত সুবিধা হবে। তারা প্রতিশোধের জন্য বিএনপিকে বাদ দিতে চাইছে। তিনি যোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দলও একই সুরে বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে সরিয়ে রাখতে হবে। এমন আচরণ যেন ফ্যাসিবাদী মনোভাবের পরিচয়। বিএনপির এই নেতা দেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা দেশের জন্য লড়াই করেছি, নিজের মাটিকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নয়। তিনি মনে করেন, নতুন ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলার প্রচেষ্টা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ও সাজেক পরিস্থিতি এবং নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনা সবই এক সূত্রে গাঁথা, অন্য কিছু নয়। আব্বাস আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং হবে, কারণ বিএনপির জনপ্রিয়তা বেশ強। প্রতিহিংসা পরায়ণ মহলটি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তবে তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে। মিথ্যা প্রচার ছাড়া দলটির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে না। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে সরকারের মতো আওয়ামী লীগের আশপাশের কিছু লোককেও সরাতে হবে। অন্যথায়, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। বিএনপি সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তারা ফেব্রুয়ারিতে ভোটের জন্য অপেক্ষা করছে। নির্বাচনকালীন জোটের প্রশ্নে আব্বাস জানান, তফসিল ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তার ধারণা, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত, যা দেশের জন্য বিপর্যয়মূলক হবে। তিনি মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের ফেব্রুয়ারিতে ভোটের আয়োজনের ঘোষণায় তিনি বিশ্বাসী। খালেদা জিয়া নির্বাচনে থাকবেন কি না—এমন প্রশ্নে আব্বাস বলেন, তার সিদ্ধান্ত এখনো নির্ধারিত হয়নি। এটি তার শারীরিক অবস্থা ও ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, সময়ই বলবে, তিনি কি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবেন। অবশেষে, ইসলামী দলগুলোর জোট গঠন প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিএনপি এতে গুরুত্ব দেয় না। কারণ, দেশের জনগণ মূলত উদার ও গণতান্ত্রিক মুসলিম। তারা সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদক পথের পরিবর্তে, মধ্যপন্থি সরকারের পক্ষে। SHARES রাজনীতি বিষয়: