বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট মুনাফা অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা গত বছর থেকে প্রায় ৭,৩০০ কোটি টাকা বেশি। এই মুনাফার মূল উৎস হলো ট্রেজারি বিল, বন্ড এবং সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্ত সুদের আয়। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংকের মোট পরিচালন আয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা, যেখানে থেকে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক ব্যয় ও কর পরিশোধের পর চূড়ান্ত নিট মুনাফা নির্ধারণ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা গত কয়েক বছর ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা। এই ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতার উন্নয়নকে নির্দেশ করে।

ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মুনাফা অর্জন করেছে। এর মধ্যে বড় অবদান রয়েছে সরকারের কাছে ঋণ দেওয়া এবং ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগের সুদ আয়ের।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই মুনাফার თანხা সরকারের কোষাগারে জমা হবে, যা দেশের বাজেট ও অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের ৪৪৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আর্থিক বিবরণী অনুমোদন দেওয়া হয়। সভার শেষে জানানো হয়, এই বিশাল মুনাফা সরকারি কোষাগারে জমা হবে, যা বাজেট পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন ধারাবাহিকভাবে মুনাফা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়, তখন এটি দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রতিফলন। এভাবেই দেশের বাজেটের আয়ের অংশ বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও সক্ষমতা বাড়ে।

এছাড়াও, এই ধরণের মুনাফার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এক ধরনের বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ব্যাংকের কর্মীদের বেসিক বেতনের ছয় গুণ ইনসেনটিভ বোনাস দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রয়েছে ব্যাংকের স্বচ্ছ নীতিমালা ও মুনাফার অংশ হিসেবে এই সুবিধা প্রদান।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা দিতে সক্ষম হয়। বর্তমানে যা এর দ্বিগুণের কাছাকাছি, সে কারণে দেশের রাজস্ব আয়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে সাধারণ অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এই মুনাফা বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সক্ষমতা ও দক্ষতার উন্নয়ন স্পষ্ট হয়। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ থাকলেও, বাংলাদেশ ব্যাংক তার আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য এক позитив বার্তা।