মির্জা আব্বাসের দাবি, দেশকে বিরাজনীতিকরণে নতুন ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ সক্রিয় Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২৫ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের পদচ্যুতির পর দেশকে রাজনীতি শূন্য করার জন্য নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে দেশি-বিদেশি মহলের একাংশ। তিনি বলেন, দেশের স্বাধীকার ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে নতুন করে একটি ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ চালু করার অপচেষ্টা চলমান। এক সাক্ষাৎকারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আব্বাস বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, খাগড়াছড়ির সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালকে কেন্দ্র করে অশুভ লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে শক্তিশালী কিছু গোষ্ঠী, যারা দেশের স্বার্থের বিরোধী শত্রুতা চালাতে প্রস্তুত। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আরও বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বিভিন্ন অজুহাতে আসন্ন নির্বাচনকে বিভ্রান্তিকর পথে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে, যাতে তারা নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করতে পারে। বিএনপি নেতার মতে, যদি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করা হয় যে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে, তাহলে দেশ বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আব্বাস বলেন, বাংলাদেশে এখন একটা নতুন ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলা চালু হয়েছে, যা ১/১১ এর সময়কার একই ধরনের পরিকল্পনার মতোই। তখন এটি সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে চালু হয়েছিল, আর এখন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে এই পরিকল্পনা প্রয়োগের চেষ্টায় লিপ্ত। তিনি অভিযোগ করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু গোষ্ঠী বিএনপিকে ‘অবিশ্বাস্য’ বা ‘খারাপ’ হিসেবে উপস্থাপনে প্রচারণা চালাচ্ছে, যাতে দলের জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ণ হয়। পাশাপাশি তিনি বলেন, এখনো আওয়ামীপন্থি কিছু কর্মকর্তারা ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কিছু অংশ বিএনপিকে দুর্বল করার জন্য সক্রিয়, কারণ তারা মনে করছে, বিএনপিকে অকার্যকর করে দিতে পারলে দেশের শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে চলে আসবে। আব্বাস এই ষড়যন্ত্রের পেছনে দেশি-বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘শয়তান নানা ছদ্মবেশে আসে’, অর্থাৎ এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বিভিন্ন পরিকল্পনাকারী রয়েছে, যারা বিএনপিকে দুর্বল বা সরিয়ে দিয়ে নিজেদের স্বার্থে জাতীয় নেতৃত্বে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চায়। তিনি আরও বলেন, কিছু আওয়ামী সমর্থক আমলাও এই পরিকল্পনায় যোগ দিয়েছে, কারণ তারা মনে করছে, বিএনপিকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিলে তাদের নিজস্ব সুবিধা হবে। এর পাশাপাশি তিনি লক্ষ্য করেছেন, কিছু রাজনৈতিক দলও এখন একই ধরনের পরিকল্পনার সাথে সামিল, যা আরও সংকটজনক। আব্বাস মন্তব্য করেন, ইসলামপন্থী একাধিক রাজনৈতিক দল নানা ইস্যু দিয়ে নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করতে চায়, এমনকি তারা বলছে, তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত নির্বাচন হতে দেবে না। এই পরিস্থিতিতে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন—দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য, কারণ ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলাম, অন্যের হাতে মাটির অধিকার দিয়েছিলেন না। তাঁর মতে, এই ‘মাইনাস-টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, সাজেক ও নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের মত বিষয়গুলো আসলে একই সূত্রে গাঁথা। তিনি আশংকা প্রকাশ করেন যে, আগামী নির্বাচন কঠিন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, কারণ বিএনপি জনসমর্থনে বিপুল, এবং কিছু মহল দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, তবে আমি বিশ্বাস করি, জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে ও তাদের সমর্থন বজায় থাকবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারি অঙ্গসংস্থাগুলোর মধ্যে থেকে আওয়ামী-সমর্থকরা যেন পদত্যাগ করে বা সরিয়ে দেওয়া হয়, তা অত্যন্ত জরুরি। বিএনপি এখন সাংগঠনিকভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং ফেব্রুয়ারির ভোটের জন্য অপেক্ষা করছে। সম্ভাব্য জোট নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আব্বাস বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে তিনি মনে করেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টায় রয়েছে, যা সফল হলে দেশ বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। তিনি আরও জানান, তিনি বিশ্বাস করেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের ফেব্রুয়ারিতে ভোটের ঘোষণা সঠিক সময়ের মধ্যে হবে। খালেদা জিয়া কি নির্বাচনে অংশ নেবেন—এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এটি তার ইচ্ছা ও স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতে বলবেন কি, তাঁর কৌশল কি হবে, এ বিষয়েও সিদ্ধান্ত সময় বলবে। ইসলামপন্থী দলগুলোর জোট গঠনের পরিকল্পনা থাকলেও তিনি জানান, বিএনপি এতে চিন্তিত নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণ মুসলমানরা ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলকেই পছন্দ করে, সাম্প্রদায়িকতার জন্য নয়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী নির্বাচন দেশকে সুপ্রতিষ্ঠিত ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হবে, এবং বিএনপির জনপ্রিয়তা অব্যাহত থাকবে। SHARES রাজনীতি বিষয়: