সিইসির বক্তব্য: ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২৫

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে দেশের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন নতুন এই লক্ষ্য সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত শনিবার বিকেলে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তাকে এ তথ্য বলেন।

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কার্যক্রম দ্রুত চালানোর জন্য বিভাগভিত্তিক প্রশাসন ও ইলেকশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত আলাপচারিতা অব্যাহত আছে। ভোটের সময় যদি কোনও কেন্দ্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলা হয় বা গন্ডগোল হয়, তাহলে ওই আসনের নির্বাচন অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনও প্রকার অশান্তি সহ্য করা হবে না। এছাড়াও, যে সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, তাদেরকে নির্বাচনে দায়িত্বে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। গত নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসাররা যেসব সমস্যার সৃষ্টি করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা অনেকটাই কমে গেছে, এই আস্থা ফিরিয়ে আনাই বর্তমান বড় চ্যালেঞ্জ। এর পাশাপাশি, এখনই নির্বাচন তফশিল ঘোষণা করা হয়নি। তফশিল ঘোষণা করার অন্তত দুই মাস আগে নির্বাচন তারিখ জানানো হবে। তবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।’

প্রসঙ্গত, সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও জেলা-উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সম্পর্কিত মতবিনিময় সভাও করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন সম্ভব। এজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি, যাতে মানুষের আস্থা পুনরুদ্ধার হয়। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি সন্তোষজনক হলেও আরও উন্নত করার প্রয়োজন রয়েছে যাতে মানুষ শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে। দীর্ঘদিনের মনোভাব তৈরি হয়েছে যে, ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ঝুঁকি বা কাকতালীয় কিছু; কিছু মানুষ মনে করে, তারা ভোট দিলে কিছু বদলাবে না। এই মনোভাব পাল্টাতে হলে সচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়োজন। সাংবাদিকদের সহযোগিতা ও সচেতনতা কার্যক্রমে তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।’

সিইসি বলেন, ‘অস্ত্রের চেয়ে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) এর অপব্যবহার। এটি ডেটা ও স্বচ্ছতার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। দুর্ব্যবহার রোধে নানা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিকরাও আমাদের এই চ্যালেঞ্জে পাশে থাকবেন—বিশেষ করে যারা পেশাদার হিসেবে কাজ করেন, তারা যেন অসত্য বা বিভ্রান্তিকর ভিডিও ও তথ্য না শেয়ার করেন। তবে, কিছু অদক্ষ বা অনৈৈতিক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে, যা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সাংবাদিকদের অনুরোধ, এধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করে শেয়ার করুন, যাতে বিভ্রান্তি হয় না।’

অতীতে যারা নির্বাচনে অবহেলা বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন কমিশন কারো পক্ষপাতিত্ব করবে না, বরং ১৮ কোটি মানুষের জন্য সত্যিকারভাবে কাজ করবে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো যেমন একটি সমস্যা, সেটি মোকাবেলায়ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সিইসি মানুষের কাছে আরও বলেন, ভোট দেয়া আমাদের নাগরিক কর্তব্য ও ঈমানী দায়িত্ব—এই কথাগুলো মনে রাখতে হবে।