নওগাঁয় মার্সেলো তরমুজ চাষে সফল কৃষকেরা Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৫ নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে এখন নতুন এক দৃশ্যের দেখা মিলছে—মাচার ওপর সবুজ পাতা আর নিচে ঝুলে থাকা কালো রঙের তরমুজ। এসব তরমুজ গাছ থেকে ছিঁড়ে পড়ার পরিবর্তে জালি দিয়ে সুরক্ষিত রাখা হয়েছে, যাতে তারা ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। আগে যেখানে এই জমিগুলোতে পটল ও করলা চাষ হত, এখন বর্ষা মৌসুমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মার্সেলো জাতের তরমুজ। নওগাঁর চাষিরা এখন পাকা ফলন পাওয়ার জন্য মাচার ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা অর্জন করেছেন। এই পদ্ধতিতে চাষকৃত তরমুজের ফলন অনেক বেশি, এবং চাষিরা 이에 খুবই সন্তুষ্ট। বাজারে এই তরমুজের চাহিদা অত্যন্ত বেশি, কারণ এর স্বাদ ও সুমিষ্টতা অতুলনীয়। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের, এবং প্রতিটি তরমুজের ওজন সাধারণত ৩ থেকে ৫ কেজি। এক বিঘা জমিতে থেকে দেড় থেকে দুই হাজারটি এই তরমুজ ফলানো সম্ভব। এ ছাড়াও, মার্সেলো জাতের এই তরমুজ ভাইরাস সহনশীল, ফলে রোগবালাই কম হয়। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেতগুলো দেখতে আসছেন, কারণ জুন মাসে এই তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে এবং ৬৫-৭০ দিনের মধ্যেই ফল আসতে শুরু করে। রাণীনগরের তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, তিনি প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন। এবারও তারা সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার না করেই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বর্তমানে বাজারে প্রতিকেজি এই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, যা চাষিদের জন্য লাভজনক। এভাবে কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে তারা খুবই খুশি। নিরাঞ্জন বলছেন, গ্রীষ্মকালীন তরমুজের সঙ্গে বর্ষাকালে এই তরমুজের চাষ দেখে অনেক মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। নতুন উদ্যোক্তারা প্রতিদিন তার ক্ষেত দেখে পরামর্শ নিচ্ছেন, তাদেরও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজ দেখে খুবই অনুপ্রাণিত হয়েছি। তার সাথে আলোচনা করে জানার পরিপ্রেক্ষিতে সে খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি বলে নিশ্চিত হয়েছি। আগামী বছর আমি দুই বিঘা জমিতে এ ধরনের তরমুজ চাষের পরিকল্পনা করেছি। এছাড়া, কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে তারা বাজার থেকে তরমুজ কিনতে বাধ্য হত; কিন্তু এখন বর্ষাকালে গাছের উপর থেকেই থোকা থোকা তরমুজ দেখে তারা অত্যন্ত খুশি। তারা দুটি তরমুজ কিনেছেন ৫০ টাকা কেজিতে, যার ওজন মোট ৮ কেজি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলার চারটি উপজেলায় মাচা ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো তরমুজের চাষ শুরু হয়েছে। এর গাঢ় লালের স্বাদ খুবই ভালো এবং কম খরচে এই চাষ পদ্ধতি খুবই ফলপ্রসূ। বর্ষাকালে এই তরমুজের চাহিদা বাড়ায় কৃষকরা এতে উৎসাহিত হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ তাদের সার্বিক সহায়তা ও উৎসাহ দিয়ে এসব উদ্যোগকে নিঃসংকোচে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে। সূত্র: বাসস SHARES অর্থনীতি বিষয়: