আরও শক্তি দেখাতে চায় আওয়ামী লীগ Staff Staff Reporter প্রকাশিত: ৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০২৪ শিক্ষার্থীদের এক দফার আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ঢাকাসহ সারা দেশে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো। তাদের শক্তিপ্রয়োগের প্রেক্ষাপটে গতকাল রোববার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ-সংঘাত হয়েছে। আরও দু-তিন দিন দলের নেতা-কর্মীদের এভাবে শক্তিপ্রদর্শনের নির্দেশনা রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানির পর সেনাবাহিনী নামিয়ে পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় প্রচণ্ড চাপে পড়ে সরকার। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ৯ দফা দাবি থেকে গত শনিবার সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে শনিবার আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক বৈঠকে রাজনৈতিক শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে এ আন্দোলন দমনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার মধ্যরাতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা মাঠে নামার প্রস্তুতি নেন। এদিন মধ্যরাতেই ঢাকার অনেক এলাকায় তাঁদের শক্তির মহড়া দিতে দেখা গেছে। রোববার সকাল থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আন্দোলন প্রতিরোধে নেমে পড়েন। তাঁদের হাতে ছিল লাঠিসোঁটা, রামদাসহ নানা রকম দেশি অস্ত্র। অনেকের হাতে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশে থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষে জড়াতে দেখা যায়। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শনিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪-দলীয় জোটের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা বলেন, তাঁদের আলোচনায় রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি সামলাতে তিন দিন সময় নেওয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি বুঝে নতুন করণীয় ঠিক করার কথা বলা হয়। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের যুক্তি হলো, ছাত্র আন্দোলন থেকে এক দফা দাবি তুলে এটিকে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ দেওয়া হয়েছে। এ আন্দোলন ছাত্রদের হাতে আর নেই। ফলে রাজনৈতিক শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে মোকাবিলা করা হলে সরকার কিছুটা সুবিধা পেতে পারে। আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, রাজনৈতিক শক্তিপ্রয়োগের ক্ষেত্রে দলটির নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়া হয় যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি ওঠার পর আর ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। কারণ, এটা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরও অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিজেদের স্বার্থেই রাজপথে নেমে যেকোনো মূল্যে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিতে হবে। গতকাল বিকেলে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের বক্তব্য তুলে ধরেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, ‘আমরা ধৈর্যের শেষ সীমায় পৌঁছে গেছি। ধৈর্য, সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এই জঙ্গিগোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’ সরকার পতনের এক দফা বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রকারীদের দাবি উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহল্লায়, রাজপথে কঠিনভাবে প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সব হত্যা, সহিংসতার দায় ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বকেই নিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের দলীয় বক্তব্য দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তুলে ধরতেন। গতকাল তিনি সংবাদ সম্মেলনে আসেননি। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, দলের সাধারণ সম্পাদক, নীতিনির্ধারক ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা গতকালও দিনভর গণভবনে কাটিয়েছেন। সেখানে দল ও সরকারের পরবর্তী করণীয় কী হবে, তা নির্ধারণে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। SHARES জাতীয় বিষয়: