‘দাম বেশি, তাই কম করে বাজার করছি’

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ১২:৪০ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২৩

ক্রমশ বেড়েই চলেছে মাছ, মাংস, সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম। বেড়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দামও। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম বাজার কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।

শুক্রবার (১২ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায়। টিসিবির হিসাবে, বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮৫ থেকে ২১৫ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও এ দামে বিক্রি হচ্ছে না। এক বছরের ব্যবধানে এ মুরগির দাম বেড়েছে ২২ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এদিকে বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। সাদা ডিমের দাম প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ২০০ থেকে ২১০ টাকা। আর হাঁসের ডিমের দাম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ডজন। গত এক সপ্তাহে ডিম ও মুরগির দামে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বাজারভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়৷ প্রতি কেজি গরুর কলিজা বিক্রি হচ্ছে একই দামে। শুধু মাত্র গরুর ফেফসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে। এক বছরে পণ্যটির ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ দাম বেড়েছে। যা এক বছর আগেও বিক্রি হতো ৮৫০ থেকে ৯৫০ টাকায়।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ১ কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ২৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়। দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই মাছের দাম প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা। শোল মাছ প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা। শিংমাছ, বাইলা মাছ প্রতি কেজি ৬০০ টাকা। আকারভেদে প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭৫০ টাকায়।

রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে এক সপ্তাহ ধরে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ, পেঁপে ও পেঁয়াজ। কাঁচা মরিচ কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৮০ টাকা এবং পেঁয়াজ কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা (উস্তা) কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, লম্বা করলা কেজি ৮০ টাকা, কাঁকরোল কেজি ১০০ টাকা, ঝিঙা কেজি ৮০ টাকা, পটোল কেজি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স কেজি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা কেজি ৮০ টাকা, শসা (দেশি) কেজি ৬০ টাকা, টমেটো কেজি ৫০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে। চাহিদা অনুযায়ী সবজি পাচ্ছেন না তারা।

সপ্তাহের ছুটির দিন বাজার করতে আসা ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, সব ধরনের সবজিই অতিরিক্ত দামে বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বেশি, তাই কম করে বাজার করছি! নিত্যপণ্যের এমন দাম শুনে হতাশ হতে হচ্ছে।

এদিকে দাম বাড়ানোর পরও কাটছে না চিনির সংকট। বৃহস্পতিবার (১১ মে) খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১৬ টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন দাম অনুযায়ী প্রতিকেজি পরিশোধিত খোলা চিনি বিক্রি হবে ১২০ টাকায়, আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হবে প্রতি কেজি ১২৫ টাকায়।

তবে বিক্রেতারা জানান, চিনির দাম বাড়ানোর ফলে পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও খারাপ হচ্ছে। দাম বৃদ্ধি হলেও সরবরাহ কমে গিয়ে বাজারে চিনির সংকট তৈরি হয়েছে।

ঠিক এক সপ্তাহ আগেই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিলো ১৮৭ টাকা। তবে নতুন দামের তেল এখনো আসেনি সবখানে। কিন্তু পুরোনো দাম লেখা মোড়কের বোতলও বাজারে বিক্রি হচ্ছে নতুন দামে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের মোড়কে দাম ১৮৭ টাকা লেখা, অথচ সেই তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়। ৩৭৪ টাকার দুই লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ৩৮০-৩৯০ টাকায় এবং ৯০৬ টাকার ৫ লিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ৯১৫-৯২০ টাকায়।