এটিএম বুথে ব্যবসায়ীকে হত্যা, ৩ বন্ধুর খোঁজে পুলিশ

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ৯:১৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২

গত ১১ আগস্ট রাতে রাজধানীর উত্তরায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন টাইলস ব্যবসায়ী শরিফ উল্লাহ (৪৪)। এ ঘটনায় আবদুস সামাদ (৩৮) নামে এক ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা। শরিফের পরিবারের সদস্যরা প্রথম থেকে বলে আসছেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। যদিও তখন পুলিশ দাবি করেছিল, এটি ছিনতাইয়ের ঘটনা। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানা একটি মামলা দায়ের করা হয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১১ আগস্ট রাতের বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সেদিন রাতে ব্যবসায়ী শরিফ তার তিন বন্ধুর সঙ্গে উত্তরার একটি বারে ছিলেন। সেই তিন বন্ধু হলেন—মুস্তাফিজুর রহমান জুয়েল, মেহেদী হাসান ও শফিক। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পথে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে টাকা উঠানোর জন্য উত্তরার জনপদ মোড়ের ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি বুথে যান শরিফ। এসময় প্রাইভেট কারে অবস্থান করছিলেন জুয়েল, শফিক ও মেহেদী। টাকা ওঠানোর সময় একজন বুথের ভেতরে ঢুকে শরিফকে ছুরিকাঘাত করে।

ছুরিকাঘাত করা ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের লোকজন তাকে ধরে ফেলে। এ সময় বুথের কয়েক গজ দূরে রাস্তার পাশে থাকা প্রাইভেট কার থেকে একজন নেমে এলেও পরবর্তীতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়া শরীফকে দেখে আবার প্রাইভেট কারে ওঠে চলে যান। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে শরিফ গাড়ি থেকে নামার পর মুস্তাফিজুর রহমান জুয়েল গাড়ি থেকে নেমে আশপাশে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিলেন। এছাড়া মেহেদী গাড়ি থেকে নেমে পায়চারি করছিলেন। বন্ধু হয়েও শরিফকে সাহায্য করা বা চিকিৎসার জন্য আশপাশের হাসপাতালে না নিয়েই প্রাইভেট কার করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তিন বন্ধু। পরে মামলার তদন্তের জন্য তাদের থানায় আসতে বলে পুলিশ। এরপর থেকেই তাদের মুঠোফোন বন্ধ। যা রহস্যের সৃষ্টি করেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শরিফের ছাত্র জীবনের বন্ধু সুতার ব্যবসায়ী মুস্তাফিজুর রহমান জুয়েল ঘটনার সময় গাড়িতে ছিলেন। তিনি ওই প্রাইভেট কারের মালিক। তিনি উত্তরার রানাভোলা এলাকার বাসিন্দা। শরীফের আরেক বন্ধু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেহেদীও ছিলেন ওই প্রাইভেট কারে। শরিফকে ছুরিকাঘাতের তিন বন্ধুই গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান।

নিহত ব্যবসায়ী শরিফের স্ত্রী রিয়ানুর পারভিন পলি বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তাকে হাসপাতালে না নিয়ে বন্ধুরা পালিয়ে গেছে কেন এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

নিহত শরিফের ভাই মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাইভেট কারে থাকা তিন বন্ধুর এগিয়ে না আসার বিষয়টি রহস্যের সৃষ্টি করেছে। এটি নিছক ছিনতাই নয়। হত্যার পরিকল্পনা থেকে বাঁচতে ছিনতাইয়ের নাটক সাজানো হয়েছে। এছাড়া এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনাস্থলের কয়েক গজ দূরে থাকা প্রাইভেট কারে বন্ধুদের শনাক্ত করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। তাদের থানায় তদন্তে সহায়তা করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা কেউই থানায় আসেনি। তাদের খোঁজা হচ্ছে।