সমকামী অধিকার কর্মীর নাগরিকত্ব বাতিলে ও ফাঁসির দাবীতে হেফাজত-এ ইসলাম-এর পোস্টার

Staff Staff

Reporter

প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২০

সম্প্রতি ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় হেফাজত-এ ইসলাম-এর একটি পোস্টার সকলের নজর কাড়ে। যে পোস্টারে লেখা রয়েছে “আল্লাহর আইন অমান্যকারী, ব্যভিচারকারী, সমকামী, আল্লাহর গজবপ্রাপ্ত, ইহুদি নাসারার এজেন্ট খায়রুল্লা খন্দকার-এর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে প্রকাশ্যে ফাঁসি দাও, দিতে হবে।”

এই ধরনের পোস্টার বাংলাদেশে সচারাচর দেখা যায়না এবং অনেকটা দূর্লভও বটে সুতরাং নিজস্ব কৌতূহলের এক গনগনে আগুনে ঝাঁপ দিতেই হোলো। স্থানীয় হেফাজতের কর্মীদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা যায়  তারা খায়রুল্লা খন্দকার নামের প্রখ্যাত একজন সমকামী ব্লগার ও সমকামী অধিকার কর্মীর প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি করছেন। এই ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনা, আলোচনা। গতকাল সারাদেশের বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন গলিতে চলেছে পোস্টারিং ও সমাবেশ। তাঁরা খায়রুল্লা খন্দকারকে বাংলাদেশের কুলাঙ্গার সন্তান হিসেবে সূচিত করেছেন।

খায়রুল্লা খন্দকার একজন সমকামী অধিকার কর্মী ও ব্লগার এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যক্তিগত ব্লগ সহ বিভিন্ন পাবলিক ব্লগ ও ম্যাগাজিনে নিয়মিত লেখালেখি করে আসছেন। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় সমকামীদের প্রতি অন্যায় অবিচার-এর বিরুদ্ধে তিনি একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠ। এছাড়া তিনি প্রচলিত ধর্মীয় গোঁড়ামি ও রীতিনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে লেখালেখি করে থাকেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি তিনি হেফাজত ইসলাম এর নেতাদের বিরুদ্ধে এবং ইসলাম ধর্মকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রবন্ধ লিখেছেন।
মামুন ইসলাম নামের এক হেফাজত-এ ইসলামের কর্মীর সাথে পোস্টার এর বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, “খায়রুল্লা খন্দকার হলো এ বাংলাদেশের একটি কুলাঙ্গার সন্তান। সে আমাদের হুজুরকে নিয়ে আজেবাজে কথা লিখে মূলত আমাদের ইসলাম ধর্মকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছে। ইসলাম অবমাননাকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমার আবেদন অবিলম্বে এই কুলাঙ্গার ও ব্যভিচারকারী সমকামীর নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে। নাহলে আমরা শীঘ্রই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।”

গফুর চৌধুরী নামের আরেকজন হেফাজতে ইসলামির কর্মীর বলেন, “বাংলার মাটিতে এ ধরনের সমকামী ও নাস্তিকদের কোন স্থান হবে না। তসলিমা নামের আরেক জারজকে আমরা লাঠিপেটা করে দেশ ছাড়া করেছিলাম। আর এবার সরকার আমাদের দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলন-এ যাবো, দরকার পড়লে সরকারি সকল ভবনে আগুন দিবো, তাও এই কুলাঙ্গার খায়রুল্লা-কে বাংলার মাটিতে বাঁচতে দিবো না।”
এটিও উল্লেখ্য যে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হৃদয় কাজী নামের একজন হেফাজত ইসলাম কর্মী একটি নাস্তিক ম্যাগাজিন ও এই ম্যাগাজিনের লেখকদের বিরুদ্ধে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য যে উক্ত মামলায় খায়রুল্লা খন্দকার-কে ৩য় নম্বর আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।